বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে শতাধিক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর শঙ্কায় যখন পুরো দেশ শোকস্তব্ধ, তখন জাতির অভিভাবক হিসেবে আবির্ভূত হলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ক্ষুদ্রঋণের বিশ্বনায়ক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ডিজিটাল থালা হাতে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে জনগণের কাছে পোড়া শিশুদের চিকিৎসার জন্য অর্থ সাহায্যের আকুল আবেদন জানান। কিন্তু এই ডিজিটাল মানবতা প্রদর্শনের কালি শুকানোর আগেই জানা গেল, তিনি কিংস পার্টির রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য জনগণের টাকায় আট-আটটি ট্রেন ভাড়া করেছেন, যার খরচ মাত্র ৩০ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা। এই ঘটনায় দেশের সুশীল সমাজ এখন অগ্রাধিকার বিষয়ক জটিল এক ধাঁধায় পড়েছে।
ফেসবুকে যখন প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলের ব্যাংক একাউন্ট নম্বর ঘুরছিল, তখন অনেকেই ভাবছিলেন, আহা! কী মহানুভব রাষ্ট্রপ্রধান! দেশের দুঃসময়ে তিনি জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাইছেন। উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা আমাদের জানান, “স্যার আসলে ‘জনঅংশগ্রহণমূলক শোক’ মডেলে বিশ্বাসী। দেশের মানুষ যখন নিজের পকেট থেকে দুই-চার টাকা দিয়ে সাহায্য করবে, তখন তাদের মধ্যে দুর্ঘটনার ভয়াবহতা নিয়ে গভীর অনুভূতি তৈরি হবে। এটা একটা যুগান্তকারী ধারণা।” এই যুগান্তকারী ধারণার ফলস্বরূপ দেশের মানুষ যখন বিকাশের পিন নম্বর হাতড়াচ্ছিল, ঠিক তখনই রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব নিশ্চিত করেন যে, জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে লোক আনতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চাহিদামতো আট জোড়া ট্রেন ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর জাতীয় অগ্রাধিকার তালিকার নিপুণ প্রকৌশলী ড. ইউনূসের অর্থনৈতিক দর্শন নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটি একটি নতুন অর্থনৈতিক মডেল, যার নাম ‘ইউনূসিয়ান প্রায়োরিটি মডেল’। এই মডেলে, জাতীয় ট্র্যাজেডির ক্ষত পূরণের চেয়ে রাজনৈতিক সমাবেশের জৌলুস বৃদ্ধি করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মৃত বা আহত শিশুরা ভোট দিতে পারে না, কিন্তু একটি সফল সমাবেশ ক্ষমতার ভিতকে শক্তিশালী করে। গরিবের বন্ধু কিন্তু কিংস পার্টির আরও বড় বন্ধু হিসেবে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, শিশুদের কান্নার শব্দের চেয়ে নেতাদের হাততালির শব্দ অনেক বেশি শ্রুতিমধুর।
জানা গেছে, মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির পর যখন অর্থ সাহায্যের পোস্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তখন নাকি এক বৈঠকে আলোচনা চলছিল কীভাবে দ্রুত ফান্ড গঠন করা যায়। ফেসবুকভিত্তিক চাঁদা সংগ্রহের ডিজিটাল রূপকার ড. ইউনূস তখন বলেন, “রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ওপর চাপ দেওয়া ঠিক হবে না। এই টাকাগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগবে। তার চেয়ে বরং আমরা জনগণের কাছে যাই। ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে যদি দারিদ্র্য দূর করা যায়, তবে ক্ষুদ্র চাঁদা দিয়ে জাতীয় বিপর্যয়ও সামাল দেওয়া সম্ভব।” এর ঠিক দুই দিন পরেই ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নামক ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ’ কাজের জন্য আট জোড়া ট্রেনের একক পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগারের দরজা খুলে দেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার আট জোড়া ট্রেনের জন্য দিয়েছে মাত্র ৩০ লক্ষ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেল কর্মকর্তা কানের কাছে মুখ এনে বলেন, “বুঝলেন না, উনারা তো সরকারি লোক, ডিসকাউন্ট তো একটু পাবেই।”
এই ঘটনায় এটি পরিষ্কার যে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে মাইলস্টোনের পুড়ে যাওয়া শতাধিক শিশুদের চেয়ে কিংস পার্টির নেতাদের গুরুত্ব অনেক বেশি। একটি শিশুর পোড়া শরীর সারানোর জন্য যে টাকার অভাব, সেই টাকাতেই একটি রাজনৈতিক দলের জন্য ৮টি ট্রেন ভাড়া হয়ে যায়। জাতি এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, হয়তো শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টার পেজ থেকে নতুন একটি পোস্ট আসতে পারে “ট্রেনের তেল কেনার জন্য অর্থ সাহায্য করুন”।
#৫ আগস্ট, #Cartunus Daily, #অন্তর্বর্তী সরকার, #অপশাসন, #অর্থ সাহায্য, #এনপিসি, #কার্টুনুস ডেইলি, #কিংস পার্টি, #জুলাই ঘোষণাপত্র, #ট্রেন ভাড়া, #ড. ইউনূস, #ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস, #দৈনিক কার্টুনুস, #ফেসবুক পোস্ট, #বাংলাদেশ রাজনীতি, #মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি, #মুহাম্মদ ইউনূস, #রাজনৈতিক ভণ্ডামি, #রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়, #সামাজিক মাধ্যম