৩০০ কোটির সফর, শূন্য অর্জন ড. ইউনূসের বিদেশ সফরের লাভ-ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব 300 Crore Spent on Travel, Nothing Achieved The Final Balance Sheet of Dr. Yunus's Foreign Trips.৩০০ কোটির সফর, শূন্য অর্জন ড. ইউনূসের বিদেশ সফরের লাভ-ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব 300 Crore Spent on Travel, Nothing Achieved The Final Balance Sheet of Dr. Yunus's Foreign Trips.

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রের টাকায় বিশ্বভ্রমণ করিয়া, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নিকট হইতে চূড়ান্ত অপমান গ্রহণ করিয়া এবং রাজবাড়ী হইতে একটি সান্ত্বনা পুরস্কার বগলদাবা করিয়া অবশেষে দেশে ফিরিয়াছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী কিন্তু দেশে অশান্তির হোতা, ক্ষুদ্রঋণের বৈশ্বিক পিতা, থ্রি-জিরো তত্ত্বের আন্তর্জাতিক ফেরিওয়ালা ও বিশ্ব পর্যটন কর্পোরেশনের স্বঘোষিত চেয়ারম্যান, এবং জুলাই ষড়যন্ত্রের ‘মেটিকুলাস ডিজাইনার’ আল্লামা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁহার এই একাদশ বিদেশ সফর দেশের জন্য কী বয়ে আনলো, এই নিয়া চুলচেরা বিশ্লেষণ করিতে গিয়া বিশ্লেষকদের চুলে টান পড়িয়াছে।

গত দশ মাসে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ করিয়া এগারোটি দেশ সফরের পর সর্বশেষ যুক্তরাজ্য সফরটি ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সফরের পূর্বে জাতির উদ্দেশ্যে ঘোষণা দেওয়া হইয়াছিল যে, এই সফরে গিয়া তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মহামান্য কিয়ার স্টারমারের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া দেশের টাকা পাচারকারীদের ধরিয়া আনিয়া আচ্ছা করিয়া ধোলাই দিবেন। রাজার হাত হইতে পুরস্কার নিবেন, আর ‘কলা বেঁচা’র অংশ হিসেবে দেশের আসল রিমোট কন্ট্রোল, লন্ডনে পলাতক মহামান্য যুবরাজ, স্কাইপযোগে বিপ্লব পরিচালনাকারী ডিজিটাল সেনাপতি তারেক রহমানের সহিত গোপন শলা-পরামর্শ করিবেন।

কিন্তু লন্ডন গিয়া দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। এ যেন কাজের বেলায় কাজী, কাজ ফুরালে পাজি। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক, ইউটিউবীয় কথার কারিগর জনাব মাসুদ কামালের ভাষায়, “বিষয়টা এমন, আপনি একজনের বাসায় গিয়ে দরজা নক করছেন। কেউ দরজা খুলছে না। অনেকক্ষণ পরে দরজা খুলে কাজের লোক বলল, স্যার আপনার সঙ্গে দেখা করবে না।”

এই ঐতিহাসিক অপমানের নেপথ্যের ঘটনা জানিতে চাহিলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব, ভূগোল শাস্ত্রের নব আবিষ্কর্তা ও ডাহা মিথ্যার পাইকারি বিক্রেতা ডাস্টবিন শফিকুল আলম একটি কফির মগে চুমুক দিয়া বলেন, “সব মিডিয়ার অপপ্রচার। স্যারের সাথে দেখা না করার মতো বুকের পাটা স্টারমারের আছে নাকি? আসল ঘটনা হইলো, স্টারমার সাহেব তো লন্ডনেই ছিলেন না।” সাংবাদিকরা বিস্ময়ে প্রশ্ন করেন, “তাহলে তিনি কোথায় ছিলেন?” জবাবে ডাস্টবিন শফিকুল বলেন, “কানাডা। জি, মহামান্য প্রধানমন্ত্রী টরন্টোতে এক জরুরি সফরে ছিলেন। সেখানকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল যে হঠাৎ বৃষ্টি হতে পারে, তাই তিনি ছাতা বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেছিলেন। তিনি আমাদের স্যারকে মেইল করে বলেছেন, ‘ডিয়ার ইউনূস, আই এম ভেরি সরি।’”

শফিকুলের এই যুগান্তকারী ভৌগোলিক আবিষ্কারে সাংবাদিক মহলে যখন তুমুল আলোড়ন, ঠিক তখনই এক তরুণ সাংবাদিক নিজের মোবাইলে বিবিসির লাইভ ফিড দেখাইয়া বলেন, “কিন্তু স্যার, এই যে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার লন্ডনের এক দোকানে পাউরুটি আর ডিম কিনছেন।” এই কথা শুনিবামাত্র ডাস্টবিন শফিকুল টেবিলের নিচে লুকাইতে চেষ্টা করিয়া বলেন, “ডিপফেক! সব ডিপফেক! পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের স্যারের এই আকাশচুম্বী সাফল্য সহ্য করতে পারছে না। পাউরুটি হাতে ওটা স্টারমার না, ওটা স্বৈরাচারের কোন এক দোসর!”

এইদিকে দেশের অর্থনীতির অবস্থা যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের চাইতেও খারাপ বলিয়া স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টাই ঘোষণা দিয়াছেন, তখন তাঁহার বিলাসবহুল সফর নিয়া প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও খরচের খতিয়ান উন্মোচনকারী গোয়েন্দা জুলকারনাইন সায়েরের ফেসবুকীয় পোস্ট হইতে জানা যায়, প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁহার ৩৭ জন সফরসঙ্গীর জন্য লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলের চার রাতের বিল আসিয়াছে মাত্র ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল যে কক্ষে স্বয়ং বিশ্ব পর্যটক অবস্থান করিয়াছেন, তাহার দৈনিক ভাড়া ছিল মাত্র ১০ লক্ষ টাকা।

জানা গিয়াছে, উক্ত কক্ষের গোল্ড প্লেটেড কমোডে বসিয়া তিনি দেশের গরিব-দুঃখী ও নতুন সৃষ্ট ১ লাখ ৬০ হাজার বেকারের জন্য নীরবে অশ্রুপাত করিতেন। যদিও টকশোর গরম মসলা আল্লামা গোলাম মাওলা রনি বলিয়াছেন, “ইহা ‘দরিদ্রের টাকায় বিলাসবহুল বিশ্বভ্রমণ’ ছাড়া আর কিছুই নহে।” তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্য জানান, “স্যার এই বিল দেখিয়া যারপরনাই ক্ষুব্ধ হইয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন, ‘দেশের অর্থনীতির জন্য বিনিয়োগ প্রয়োজন, আর বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে আমাদের অন্তত ২৫ কোটি টাকার হোটেলে থাকা উচিত ছিল। নইলে বিনিয়োগকারীরা বুঝবে কীভাবে আমাদের অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা? এই সামান্য বিল দিয়া তো বিনিয়োগকারীদের সামনে আমার ইজ্জত শেষ কইরা ফেললা!’ দেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথা ভাবিয়াছেন। বিবিএস যখন জানাইল যে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ছাড়িয়েছে, তখন তিনি বলিয়াছেন, “চিন্তার কোনো কারণ নাই। আমার পরবর্তী দ্বাদশ সফরে এই ৩৭ জনের সাথে আরও ১ লাখ ৬০ হাজার লোককে সফরসঙ্গী হিসেবে নিয়া যাওয়া হইবে। ইহাতে বেকার গুলার কর্মসংস্থানও হইবে, বিশ্বও দেখা হইবে। এক টিকিটে দুই ছবি!”

তাঁহার সফরের অর্জন নিয়া প্রশ্ন করা হইলে তিনি চীনের সহিত সম্পাদিত ৯টি সমঝোতা স্মারকের কথা উল্লেখ করেন। যদিও পরে জানা যায়, এই স্মারকগুলির মধ্যে একটি ছিল ‘কীভাবে চপস্টিক দিয়ে নুডলস না ফেলে খাওয়া যায়’ তার উপর একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি, এবং আরেকটি ছিল ‘চীনা ভাষায় ধন্যবাদ (শিয়ে শিয়ে) বলার শুদ্ধ উচ্চারণ’ বিষয়ক কর্মশালা। জাপানের ১.০৬ বিলিয়ন ডলারের লোন নিয়া তিনি এমনভাবে ফটোসেশন করিয়াছেন, যেন টাকাটা পূর্ববর্তী সরকারের আমলে গৃহীত প্রকল্প নয়, বরং তিনিই জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পকেট হইতে টানিয়া বাহির করিয়াছেন। এমনকি ভ্যাটিকান সিটিতে পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করিতে গিয়াও তিনি নিজের ‘থ্রি-জিরো’ তত্ত্ব মার্কেটিং করিতে ছাড়েন নাই। কথিত আছে, তাঁহার তত্ত্ব শুনিয়া পোপের আত্মাও নাকি বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছিল।

অবশেষে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পাইলেও তিনি একেবারে খালি হাতে ফেরেন নাই। রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত হইতে ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ নামক একটি পুরস্কার তিনি গ্রহণ করিয়াছেন। তবে রাজপরিবারের এক কর্মচারী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, “এটা আসলে সান্ত্বনা পুরস্কার। প্রধানমন্ত্রী দেখা না করায় রাজা বাহাদুর একটু লজ্জা পেয়েছিলেন। তাই ইউনূস সাহেবকে ডেকে এই পুরস্কারটি হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন’”

এইসব সফরের মাধ্যমে দেশের কী লাভ হইয়াছে, এই প্রশ্নের উত্তরে এক বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ বলেন, “লাভ তো হইয়াছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও দ্রুত গতিতে কমানো সম্ভব হইয়াছে। ৩০০ কোটি টাকা তো চাট্টিখানি কথা নয়!”

দিনশেষে, দেশের মানুষ দেখিতেছে যে তাহাদের প্রধান নির্বাহী এক পায়ে হোয়াইট হাউজ আর অন্য পায়ে ডাউনিং স্ট্রিট রাখিলেও, কোনো দেশের সরকারপ্রধানই তাঁহাকে পাত্তা দিতেছে না। তাঁহার সফরের একমাত্র আসল ‘দ্বিপাক্ষিক’ বৈঠকটি হইয়াছে লন্ডনে পলাতক যুবরাজের সহিত, যেখানে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, যেমন—পরবর্তী সফরে কয়টি স্যুটকেস নেওয়া হইবে, তাহা নির্ধারিত হইয়াছে।

দেশের মানুষ এখন একটিই প্রশ্ন করিতেছে, আমাদের বিশ্বজয়ী উপদেষ্টার পায়ের তলায় তো গোটা বিশ্ব, কিন্তু বাংলাদেশের মাটি কি আছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *