ঐকমত্যের নামে ৮৩ কোটির চা নাশতা, বিএনপিকে ধোঁকা দিয়ে আলী রীয়াজ পালিয়েছে

ঐকমত্যের নামে ৮৩ কোটির চা নাশতা, বিএনপিকে ধোঁকা দিয়ে আলী রীয়াজ পালিয়েছে। 83 crore for 'tea and snacks' in the name of consensus, Ali Riaz has fled after deceiving BNP. ঐকমত্যের নামে ৮৩ কোটির চা নাশতা, বিএনপিকে ধোঁকা দিয়ে আলী রীয়াজ পালিয়েছে। 83 crore for 'tea and snacks' in the name of consensus, Ali Riaz has fled after deceiving BNP.

ঐকমত্যের নামে ৮৩ কোটির শ্রাদ্ধ! বিএনপিকে কলা দেখিয়ে আলী রীয়াজ পালিয়েছে।

বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: জাতীয় জীবনের সব হিসাব-নিকাশ, কচকচানি আর কিচিরমিচিরের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এক ঐতিহাসিক ঐকমত্যে পৌঁছেছে বঙ্গভূমি। আর সেই ঐকমত্যটা হলো, এই দেশে কেউই কাউকে বিশ্বাস করে না এবং প্রত্যেকেই প্রত্যেকের সঙ্গে চরমভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করতে সদাপ্রস্তুত। এই মহাসত্যটি হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে বর্তমানে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় বুক চাপড়ে বিলাপ করছেন বঙ্গদেশীয় নালিশ পার্টির (বিএনপি) সদ্য-ধোঁকা-খাওয়া মহাসচিব, অশ্রুবিসর্জন-বিশেষজ্ঞ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সর্বশেষ কান্নাকাটির কারণ, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের স্বঘোষিত সহসভাপতি, দ্বৈত-নাগরিকত্বের ছুপা-রুস্তম, সংস্কার-চাণক্য অধ্যাপক আলী রীয়াজ তাদের সব আস্থায় জল ঢেলে দিয়ে মার্কিন মুলুকে পগার পার হয়েছেন।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে মির্জা ফখরুল এক জরুরি কান্নাকাটি সম্মেলনে ডুকরে উঠে বললেন, “ওরা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে! বিশ্বাসঘাতকতা করেছে! আমরা সরল মনে ওদের বিশ্বাস করেছিলাম। ভেবেছিলাম, ওরা বুঝি আসল সংস্কারক। কিন্তু এখন দেখছি, ওরা সংস্কারক নয়, ওরা হলো ‘মার্কিনিদের দালাল’!”

এই পর্যায়ে তিনি টিস্যু পেপার দিয়ে নাক পরিষ্কার করে আরও যোগ করলেন, “আমরা তো আগেই বলেছিলাম, গণভোট নির্বাচনের দিন একসঙ্গেই হোক। কিন্তু ওরা শুনলো না। এখন বুঝলাম, সবটাই ছিল ভাওতাবাজি। আলী রীয়াজ গং আসলে দেশ ধ্বংসের মিশনে এসেছিল। ওরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে মিলে একটা পাতানো খেলা খেলেছে। আর আমরা বোকার স্বর্গে বাস করে ওদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি!”

অনুসন্ধানে জানা যায়, এই আলী রীয়াজ মহাশয় নয় মাসে সংস্কারের নামে তাত্ত্বিক কচকচানি বাবদ প্রায় তিরাশি কোটি টাকা ফুঁকে দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পান দোকানদার জানিয়েছেন, “ঐ আলী রীয়াজ সাহেবরে প্রায়ই দেখতাম। মুখে খালি বড় বড় বুলি। ‘বুকিশ’, ‘হজপজ’ এইসব কী সব কিটকিটা শব্দ বলতেন। আমরা তো ভাবছিলাম, দেশটারে উনি সিঙ্গাপুর বানিয়ে ফেলবেন। এখন দেখি, উনি নিজেই তিরাশি কোটিসহ আমেরিকা ভেগে গেলেন! দেশটারে বানিয়ে গেলেন ফকির!”

এদিকে জানা যাচ্ছে, আলী রীয়াজের এই পালানোর কাণ্ডে কেবল বিএনপিই নয়, স্বয়ং অন্তর্বর্তী সরকারও নাকি কিছুটা বিব্রত। সরকারের এক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, “আলী রীয়াজ সাহেব তো আমাদের কমিশনের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি যে এভাবে আমাদের না বলে, সবুজ পাসপোর্টের বদলে নীল পাসপোর্টটা বগলে চেপে উড়াল দেবেন, তা আমরা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি। আমরা তো ভেবেছিলাম, তিনি জুলাই সনদের সুপারিশমালা নিয়ে গবেষণা করছেন। কিন্তু তিনি যে সুপারিশমালার বদলে নিজের পালানোর সুপারিশ নিজেই করে ফেলবেন, তা কে জানতো!”

এই তথাকথিত ‘সংস্কার কমিশন’ এবং ‘ঐকমত্য কমিশন’ যে আসলে একটা বিশাল ভাওতাবাজির কারখানা, সেই গুঞ্জন গোড়া থেকেই বাতাসে ভাসছিল। বিশেষজ্ঞরা তখনই কপাল চাপড়ে বলেছিলেন, এই সব কমিশনে এমন সব ধবধবে সাদা-শার্ট-পরা, চোখে-ভারী-চশমা-আঁটা পণ্ডিত ব্যক্তিদের বসানো হয়েছে, যারা জীবনেও খালি পায়ে মাটির রাস্তায় হাঁটেননি। ওরা মাটির গন্ধ কী জিনিস, তা কেবল বিদেশি পারফিউমের বোতলে খুঁজে বেড়ান। এই ‘শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিপ্লবী’গণ এসি গাড়ি থেকে নেমে সোজা এসি টকশোতে বসেন, বোতলের বিশুদ্ধ পানি পান করেন আর ‘গণতন্ত্র’, ‘সংবিধান’, ‘সিস্টেমিক রিফর্ম’ ও ‘কাঠামোগত সংস্কার’ নিয়ে এমন সব দুর্বোধ্য কিটকিটা পাণ্ডিত্য জাহির করেন, যা সাধারণ মানুষের মাথার একশ হাত ওপর দিয়ে চলে যায়। ওরা জানেন না এক কেজি চালের দাম কত, কিংবা রিকশাওয়ালা ঘামে ভিজে কত টাকা আয় করে। তাদের মূল এসাইনমেন্টই ছিল ভিন্ন। তাদের কাজই ছিল এমন সব অবাস্তব সুপারিশ প্রসব করা, যা নিয়ে জাতি আগামী পঞ্চাশ বছরেও সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না, কেবল নিজেদের মধ্যে চুলোচুলি আর মারামারি করে মরবে।

এই সব অদ্ভুত ও অবাস্তব সুপারিশ দেখেই বিএনপি নেতারা প্রথমে একটু গাঁইগুঁই করেছিলেন। তারা কিছু কিছু জায়গায় ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ‘ভিন্নমতের কথা’ লিখে দিয়েছিলেন। মির্জা ফখরুল ভেবেছিলেন, আলী রীয়াজ সাহেব তাদের এই ‘নোট অব ডিসেন্ট’কে সম্মান জানাবেন। কিন্তু হায়! আলী রীয়াজ সেইসব ‘নোট অব ডিসেন্ট’কে টয়লেট পেপার হিসাবে ব্যবহার করে সোজা ওয়াশিংটনের প্লেনে চড়ে বসেছেন।

এই ঘটনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নালিশ পার্টি বিএনপি। তারা দীর্ঘ ষোলো বছর ধরে কান্নাকাটির মাধ্যমে যে তথাকথিত গণঅভ্যুত্থান ঘটালো, সেই গণঅভ্যুত্থানের পর তারা আশা করেছিল, অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার কমিশন তাদের কোলে টেনে নেবে। তারা ভেবেছিল, এরাই ক্ষমতার মসনদ তাদের জন্য পরিষ্কার করে দেবে। এই আশায় বুক বেঁধে তারা আলী রীয়াজ গংদের সব আবদার ও ভেলকিবাজিকে ‘গণতন্ত্রের স্বার্থে’ মেনে নিয়েছিল। তারা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দিনের পর দিন বসে চা-সিঙ্গাড়া খেয়েছিল আর জুলাই সনদে দস্তখত করেছিল।

কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে তারা দেখলো, যাদের তারা বন্ধু ভেবেছিল, সেই সংস্কারকরাই আসলে তাদের পিঠে ছুরি মেরেছে। আলী রীয়াজ কেবল তাদের সঙ্গেই প্রতারণা করেননি, তিনি স্বয়ং অন্তর্বর্তী সরকারকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আমেরিকা পালিয়েছেন। এখন মির্জা ফখরুল সাহেবরা বুঝতে পারছেন, এই অন্তর্বর্তী সরকারও ভালো নয়, সংস্কার কমিশনও ভালো নয়, আর তারা নিজেরাও যে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন, তাও নয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এক শিক্ষক, যিনি সম্প্রতি আলী রীয়াজের তিরাশি কোটি টাকার হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেই মোশাররফ আহমেদ ঠাকুর মহাশয় এই ঘটনায় অট্টহাসি দিয়ে বলেছেন, “আমি তো আগেই বলেছিলাম! নয় মাস ধরে ৮৩ কোটি টাকা খরচ করে এখন বলছে ‘রাজনৈতিক দলগুলো আপনারা বসে সিদ্ধান্ত নেন’? এখন ‘মাঠও নাই, পুরোহিতও নাই’? আরে ভাই, পুরোহিত তো প্লেনে বসে শ্যাম্পেন খাচ্ছে! ডক্টর ইউনূস এক মূষিক প্রসব করেছেন, আর সেই মূষিকের নাম আলী রীয়াজ, যে কিনা দেশের পনির খেয়ে আমেরিকায় পালিয়েছে!”

সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমেরিকার দূতাবাসে একটি জরুরি চিঠি পাঠিয়ে আলী রীয়াজকে ফেরত চেয়েছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, “আলী রীয়াজ সাহেব আমাদের ‘নোট অব ডিসেন্ট’গুলো ফেরত না দিয়ে চলে গেছেন। ওগুলো ফেরত না পেলে আমরা পরবর্তী নির্বাচনে কী ইশতেহার দেবো, তা বুঝতে পারছি না। দয়া করে ওকে ফেরত পাঠান, নইলে আমরা আবারও কান্নাকাটি করতে বাধ্য হবো।”

এদিকে, মার্কিন মুলুক থেকে আলী রীয়াজ এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি বড্ড ‘হজপজ’। আমি ‘বুকিশ’ মানুষ, এত প্যাঁচঘোচ বুঝি না। আমি কেবল ঐকমত্য এনে দিয়েছি। এখন ওরা নিজেরা মারামারি করলে আমার কী করার আছে? আর তিরাশি কোটির হিসাব আমি আমার আত্মজীবনীতে লিখে যাবো।”

এই ঘটনায় একটি বিষয় পরিষ্কার, বিএনপি, অন্তর্বর্তী সরকার, কিংবা সংস্কার কমিশন, কেউই আসলে জনগণের বন্ধু নয়। ওরা সকলেই এক ভয়ংকর ‘কানামাছি’ খেলায় মেতেছে, যেখানে দেশটাই হলো খেলার মাঠ আর দর্শক জনগণের চোখ বাঁধা। নালিশ পার্টি ভাবছে, এই খেলার আড়ালে কেমন করে ক্ষমতার চেয়ারখানা হাতড়ে বসা যায়। তাই তারা কখনও সংস্কার কমিশনের সঙ্গে গুজুর-গুজুর করে, আবার ধোঁকা খেয়ে জনগণের দুয়ারেই কান্নাকাটি করে। অন্তর্বর্তী সরকার হলো সেই ‘রেফারি’, যে নিজেই গোল দেবার ধান্ধায় আছে। তারা ‘নিরপেক্ষতার’ মুখোশ পরে এমন সব কিটকিটা নিয়ম বানাচ্ছে, যাতে খেলাটা আরও পাঁচ বছর চালানো যায়। আর সংস্কার কমিশন? ওরা ৮৩ কোটি টাকার চা-নাশতা খেয়ে এমন এক গোলকধাঁধা বানিয়ে গেছে যে, খেলোয়াড়েরা নিজেরাই পথ হারিয়ে ফেলেছে।

এই তিন পক্ষের স্বার্থের টানাটানিতে, জনগণ হয়েছে ‘ফুটবল’। বিএনপি ক্ষমতায় যেতে চায়, তাই জনগণকে দেয় এক লাথি। অন্তর্বর্তী সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায় তাই তারা মারে আরেক লাথি। আর সংস্কার কমিশন ‘সিস্টেম’ বদলাতে গিয়ে এমন জোরে লাথি কষিয়েছে যে, বল এখন আমেরিকা যাবার দশা! জনগণের পেটে ভাত থাকুক বা না থাকুক, তাদের চাল-ডালের পয়সা থাকুক বা না থাকুক, সেইদিকে কারও ভ্রুক্ষেপ নেই। ওরা ব্যস্ত ‘গণভোট’, ‘জুলাই সনদ’ আর ‘সংবিধান সংস্কার’ নিয়ে উচ্চমার্গের কচকচানিতে। আর জনগণ ফুটবলের মতো একবার এই পায়ে, একবার ঐ পায়ে গড়াগড়ি খেতে খেতে ভাবছে, “আরে, খেলাটা শেষ হবে কবে?”

#, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *