ঢাকা-রাজশাহী রুটে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ: একটি অন্ধকার রাতের গল্প
বাংলাদেশের মাটি আজ কাঁদে ধর্ষিতা নারীর বেদনায়,
চোখ বুজে থাকা সহযাত্রীরা, তোমাদের নীরবতাই কি সম্মতি জানায়?

ঢাকা-রাজশাহী রুটে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ: একটি অন্ধকার রাতের গল্প

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাতে ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচলকারী একটি বাসে ঘটে যাওয়া ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনায় বাসটি প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতদের দখলে ছিল, এবং এ সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও পুলিশ এখনও ধর্ষণের বিষয়টি লুকাতে চাচ্ছে, তবে যাত্রীদের বর্ণনা ও সাক্ষ্য এই ঘটনার ভয়াবহতা তুলে ধরে। তাদের বর্ণনায় উঠে এসেছে, বাসটি গাবতলী থেকে রাত সাড়ে ১১টায় ছেড়ে যাওয়ার পর মধ্যরাতে ডাকাতরা বাসে ওঠে। ডাকাতরা বাসের চালক ও সহকারীর সহায়তায় যাত্রীদের টাকা-পয়সা, গয়না ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। এ সময় তারা নারী যাত্রীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। বিশেষ করে দুই নারী যাত্রীকে পেছনের সিটে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাদের ওপর যৌন নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাসযাত্রী সোহাগ হাসান বলেন, “চিৎকারের আওয়াজ পাচ্ছিলাম, কিছুই করার ছিল না। ধর্ষণ না করলে কেউ এত চিৎকার করবে না।”

এই ঘটনায় বাসের চালক, সহকারী ও সুপারভাইজারকে আটক করা হয়েছে, তবে তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি, কারণ ধর্ষণের অভিযোগ নিশ্চিত হওয়ার মতো প্রমাণ নেই। তবে যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। বড়াইগ্রাম ও মির্জাপুর থানার পুলিশ বলছে, তারা ধর্ষণের বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি, তবে যাত্রীদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করেছেন।

এই ঘটনা সমাজে নারী নিরাপত্তা ও গণপরিবহনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ডাকাতরা কীভাবে এত সহজে বাসে ওঠে এবং সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে যাত্রীদের ওপর নির্যাতন চালায়, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, বাসের চালক ও সহকারীরা ডাকাতদের সহায়তা করেছে, যা এই ঘটনাকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গণপরিবহনে নারী ও সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পুলিশের তদন্তে স্বচ্ছতা ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।