বাড়ি ভাঙার নবজাগরণ: ড. ইউনূসের বুলডোজার কর্মসূচিতুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বুলডোজার নিয়ে আমেরিকায় রওয়া দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে একের পর এক ভবন-ঐতিহাসিক স্থাপনা-ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষত, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সম্পত্তি ভাঙার বিষয়টি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠছে। এই ধ্বংসলীলাকে কিছু বিশ্লেষক দেখছেন, ড. ইউনূস সরকারের তথাকথিত “সংস্কার” হিসেবে, যদিও সাধারন জনগণের মতে এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসারই বহিঃপ্রকাশ।

প্রতিদিনই নতুন নতুন বাড়ি ভাঙার মহোৎসব চলছে বাংলাদেশে, যেন এটি এখন জাতীয় ক্রীড়া ইভেন্ট হয়ে গেছে। শখ করে এই ইভেন্টের নাম দেওয়া হয়েছে “বুলডোজার কর্মসূচি“। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি ভাঙার মাধ্যমে ড. ইউনূসের সংস্কার দর্শন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, আর এই কর্মকাণ্ডে ‘অবৈধ সরকার’ ও তার সমন্বয়কারীরা নীরবে মুচকি হাসছে।

একের পর এক বাড়ি ভাঙতে ভাঙতে বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও ধ্বংস হতে বসেছে! সেই ঐতিহাসিক ধানমন্ডি ৩২ নম্বরও টিকে থাকল না! জাতির জনকের স্মৃতিচিহ্ন ভেঙে ইউনুসীয় উন্নয়নের নতুন রূপ দেওয়া হলো! বাহ, কী দুর্দান্ত চিন্তা! হয়তো নতুন কোনো ‘নোবেল সম্মাননা’ এসে হাজির হবে এই সৃজনশীল ধ্বংসযজ্ঞের জন্য।

এদিকে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশে চলমান ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে আলোচনা চলছে। মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়েও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। তিনি বলেছেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে খুব লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, ক্যাথলিক ও অন্যদের ওপর যে ধর্মীয় নির্যাতন, হত্যা ও অত্যাচার চালানো হচ্ছে সেটা আমেরিকার সরকার তথা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের জন্য খুব বড় একটা উদ্বেগের জায়গা।”

তুলসী গ্যাবার্ডের এই মন্তব্য জঙ্গি মদদপুষ্ট ড. ইউনূসের ‘অবৈধ সরকারের’ হৃদয়ে শেল হয়ে বিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, “তুলসী গ্যাবার্ডের মনের মধ্যে কি ডর ভয় নাই? বুলডোজার কর্মসূচি থেকে তিনি কি রক্ষা করতে পারবেন নিজের বাড়ি?” সাবধান! ড. ইউনূসের এক নির্দেশেই কিন্তু, বুলডোজার নিয়ে আমেরিকায় রওয়ানা হয়ে যেতে পারে সমন্বয়ক আর তৌহিদী জনতা নামধারী জঙ্গিরা।

সময় এখন ইউনূসের সরকারে থাকা জঙ্গিদের! তাই সাতর্ক থাকুন! বিরুদ্ধাচরণ করবেন তো খোলা আকাশের নিচে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিয়েই করবেন, মাথার উপর ছাদ আর ইউনূসের সমালোচনা দুইটা একসঙ্গে চলতে পারেনা, যে কোনো মুহূর্তে ইউনূসীয় বুলডোজার কর্মসূচির করাল গ্রাস এসে হাজির হতে পারে!

তবে এই ‘ভাঙ্গাভাঙ্গি বিপ্লব’ দেখে মনে হচ্ছে ড. ইউনূস ভুলে গিয়েছেন, দেশের রাজনীতিতে যে কোনো পরিবর্তন এলে ‘ইতিহাসের চাকা ঘুরে ফিরে আসে’—আজ যাঁরা বুলডোজার অভিযানের সুবিধাভোগী, ভবিষ্যতে তাঁরাও বিপদের মুখে পড়তে পারেন। সেসময় ইউনূস ও তার সমন্বয়কারীরা নিজেদের বাড়ি/স্থাপনা রক্ষা করতে পারবে তো?

লিখেছেনঃ এস এইচ চৌধুরী