খোকার ডিম বনাম হঠাৎ আমীরের স্কিম: মেয়র পদ নিয়ে নগর ভবনে ধুন্ধুমার
কার্টুনুস ডেইলি প্রতিবেদক
ঢাকা দক্ষিণের নগর পিতার চেয়ারটি খালি পড়ে থাকায় রাজধানীর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। মসনদ দখলের এই লড়াইয়ে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়েছেন দুই হেভিওয়েট প্রার্থী, আর তাদের অদ্ভুত রণকৌশল দেখে নগরবাসী পড়েছে চরম বিভ্রান্তিতে। একদিকে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে মেয়র হওয়ার স্বপ্নে বিভোর এক প্রার্থী, অন্যদিকে কোনো প্রকার নির্বাচনের ধার না ধেরে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতিতে বিশ্বাসী আরেক মহারথী।
এই লড়াইয়ের অন্যতম কুশীলব, পাকিস্তানপন্থী নব্য রাজাকারদের আঁতুড়ঘরে জন্ম নেওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনপিসি) নামক ভুঁইফোড় দলে স্বঘোষিত মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল), ‘বিনা নির্বাচনে প্রশাসক আমি’ নীতির প্রধান প্রবক্তা, কায়েদে আজম জিন্নাহর হারানো ভাবশিষ্য, গণতন্ত্রকে বাতুলতা আখ্যাদানকারী দার্শনিক এবং আম-জনতার ভোটকে সময়ের অপচয় ঘোষণাকারী আল্লামা হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে হুঙ্কার ছেড়েছেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “নির্বাচন ফির্বাচন হইল গিয়া ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া অপ্রয়োজনীয় বাহুল্য। নগর চালাবে বাঘের বাচ্চা, আর বাঘ কি কখনো ভোটারের ভোট সুদে? আমি হইলাম এই নগরের অটো চয়েস বাঘ। জনগণ আমার দিকে চাতক পাখির ন্যায় চাহিয়া আছে।”
ইশরাক হোসেনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, “ঐ খোকার ডিম যদি বেশি লাফালাফি করে, ওর বাপের নাম আর আদালতের রায় নিয়া আস্ফালন করে, তবে ওর রায় আমি জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে আগামী ৩৬শে জুলাই এর আগেই সুদিয়া দিব। এসময় হাসনাত আব্দুল্লাহ ইশরাক হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন “নগর ভবন তোমার বাপের সম্পত্তি নহে।”
অন্যদিকে, এই লড়াইয়ের অপর মহাবীর, আলহাজ্ব সাদেক হোসেন খোকার রেখে যাওয়া নগর ভবনের একমাত্র ডিম্বজাত উত্তরাধিকার, বৃহত্তর জামায়াতের বিএনপি শাখার অন্যতম ভবিষ্যৎ কান্নাকাটি বিশেষজ্ঞ, বক্সিং রিং থেকে ভুল করে রাজনীতির রিং-এ অবতরণকারী আন্তর্জাতিক মানের মুষ্টিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আজ নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হুহু করে কেঁদে উঠে তিনি বলেন, “আমার বাবা এই নগর ভবন তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। প্রতিটি ইটের ভাঁজে ভাঁজে উনার স্মৃতি। আর আজ কোথাকার কোন হাসনাত আসিয়া পেশিশক্তি দিয়া উহা দখল করিতে চায়? ইহা কি মবের মুল্লুক? আমি আদালতের মাধ্যমেই আমার হক আদায় করিয়া ছাড়িব ইনশাল্লাহ।”
এদিকে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর এই লড়াই দেখে নগর ভবনের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়া কয়েকটি শূকরশাবক খুশিতে কোঁৎ কোঁৎ শব্দ করে ওঠে। তাদের মধ্যে একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে কার্টুনুস ডেইলিকে জানায়, “ঝগড়া দেইখা ব্যাপক মজা লাগতাছে। যেই মেয়র হৌক, আমাগো তো ময়লা খাবার নিয়া কথা। সাপ্লাই ঠিক থাকলেই হইল।”
সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, ইশরাক হোসেন জুলাই মাসে নগর ভবনের সামনে ‘দাবি আদায়’ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন, অন্যদিকে হাসনাত আব্দুল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন, ঐদিন তিনি তার সমর্থকদের নিয়ে ‘মহব্বতের সহিত মব‘ গড়ে তুলবেন।
এই দুই পীরের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত নগরবাসী কী পাবে, তা সময়ই বলে দেবে।