বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: ‘অপারেশন ছাগল’ এই তিনটি শব্দ এখন দেশজুড়ে পরিচিত। মন্ত্রিপাড়ার সুরক্ষিত এলাকায় দেয়াল টপকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের ছাগল চুরির ঘটনা সবাই জানে। কিন্তু এই দুঃসাহসিক অভিযানের পেছনের কারণটা কী? এটা কি শুধুই খাবারের লোভ, নাকি এর গভীরে লুকিয়ে আছে কোনো মহৎ উদ্দেশ্য? কার্টুনুস ডেইলির অনুসন্ধানী দল এবার প্রবেশ করেছে এই অভিযানের মূল হোতা, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মনোজগতে। আমাদের এই এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সেই রাতের না বলা অধ্যায়।
ডিসেম্বরের সেই রাতে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও তাঁর সহযোগী রিফাত রশিদ যখন এক ‘গভীর তাত্ত্বিক’ আলোচনায় বসেছিলেন, তখন তাঁদের সামনে ছিল বিদেশী মদ আর দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে জটিল সব সমীকরণ। আমাদের বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, সেই আলোচনার মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘ঝাল ফ্রাই’ এর অভাব। পাটওয়ারীর এক ঘনিষ্ঠ সহচর নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “ভাইয়েরা কয়েকদিন ধরেই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে ভাবতে শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। তাই রুচি পরিবর্তন করতে আমরা একটা মদের আড্ডায় বসেছিলাম। সেখানেই রিফাত রশিদ ওরফে বুবিস রিফাত প্রস্তাব করেন মদের সাথে ঝাল ফ্রাই ছাড়া দেশের সংটক উত্তোরন সম্ভব নয়। তখনই পাটওয়ারী ভাই আইন উপদেষ্টার বাংলোর দিকে তাকিয়ে এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘ঐ দেখ্, অব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় সম্পদ অলসভাবে ঘাস খাচ্ছে, আর আমরা এখানে প্রোটিনের এর অভাবে জাতি গঠনের পরিকল্পনা করতে পারছি না। এটা হতে পারে না!’”
এই একটি উপলব্ধিই ছিল ‘অপারেশন ছাগল’-এর মূল চালিকাশক্তি। এটি কোনো চুরির পরিকল্পনা ছিল না; ছিল অব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় সম্পদকে ছাত্রনেতাদের পুষ্টির কাজে লাগিয়ে দেশের সেবায় ফিরিয়ে আনার এক মহৎ উদ্যোগ। রিফাত রশিদ, যিনি এই অপারেশনের ‘প্রধান শিল্প নির্দেশক’ ছিলেন, তিনি তৎক্ষণাৎ পাটওয়ারীর এই গভীর দর্শনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। তাঁদের মধ্যে কোনো দীর্ঘ পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়নি। দুই নেতার চোখের ইশারাই ছিল যথেষ্ট। মুহূর্তের মধ্যে গঠিত হয় একটি চৌকস দল, যারা এই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত ছিল।
এরপরের ঘটনা ইতিহাস। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যখন উপদেষ্টার বাংলোর দেয়ালে চড়ছিলেন, তখন তিনি কেবল একটি দেয়াল টপকাচ্ছিলেন না; তিনি যেন শাসক ও শাসিতের মধ্যকার অদৃশ্য দেয়ালকে ভেঙে দিচ্ছিলেন। ভেতরে থাকা ছাগল দুটি প্রথমে সামান্য বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে কমান্ডার পাটওয়ারী তাদের সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত ‘সংলাপে’ বসেন। জানা যায়, দেশের ভবিষ্যৎ নেতাদের জন্য আত্মত্যাগের মহত্ত্ব বোঝানোর পর ছাগল দুটি স্বেচ্ছায় এই অভিযানে সহযোগিতা করতে রাজি হয়।
এই অভিযানের সবচেয়ে শৈল্পিক মুহূর্তটি ছিল সিসিটিভি ক্যামেরার সামনে পোজ দেওয়া। এটি কোনো ছেলেমানুষি ছিল না; ছিল ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম লিখে রাখার একটি পরিকল্পিত প্রয়াস। ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও রিফাত রশিদ যেন বোঝাতে চেয়েছেন, ‘আমরা যা করি, তা জেনেশুনেই করি এবং ইতিহাস আমাদের মনে রাখবে।’
পরবর্তীতে সেই ছাগলের মাংস দিয়ে আয়োজিত ভোজসভাটি ছিল কেবল একটি ভোজ নয়, সেটি ছিল একটি সফল মিশনের পর বিজয় উৎসব। সেই রাতে তাঁরা শুধু ছাগলের মাংসই খাননি, খেয়েছিলেন উপেক্ষা আর ধনতন্ত্র বিরুদ্ধে বিজয়ের স্বাদ।
সুতরাং, ‘অপারেশন ছাগল’ কোনো সাধারণ অপরাধ নয়। এটি ছিল ক্ষুধার্ত ছাত্রনেতাদের এক শৈল্পিক প্রতিবাদ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদকে সঠিক কাজে ব্যবহারের এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর এই একটি পদক্ষেপ প্রমাণ করে, সঠিক নেতৃত্ব পেলে সাধারণ ছাগলও অসাধারণ ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠতে পারে।
#Cartunus Daily, #অন্তর্বর্তী সরকার, #অপারেশন ছাগল, #আইন উপদেষ্টা, #আইন উপদেষ্টার ছাগল চুরি, #আসিফ নজরুল, #আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, #উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, #কার্টুনুস ডেইলি, #চুরি করে ছাগল খাওয়া, #ছাগল-কান্ড, #জাতীয় নাগরিক পার্টি, #ডার্ক কমেডি, #দৈনিক কার্টুনুস, #নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, #বাংলা স্যাটায়ার, #বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি, #বুবিস রিফাত, #মন্ত্রিপাড়ার ঘটনা, #রমনা থানা, #রাজনৈতিক রম্য, #রাজনৈতিক স্যাটায়ার, #রিফাত রশিদ