রাষ্ট্রীয় টাকায় ফটোশপ: ট্রাম্পের সঙ্গে ড. ইউনূসের ছবি কি আসল না নকল

রাষ্ট্রীয় টাকায় ফটোশপ: ট্রাম্পের সঙ্গে ড. ইউনূসের ছবি কি আসল না নকল। State Funds for Photoshop? Authenticity of the Trump-Yunus Photo Comes into Question.রাষ্ট্রীয় টাকায় ফটোশপ: ট্রাম্পের সঙ্গে ড. ইউনূসের ছবি কি আসল না নকল। State Funds for Photoshop? Authenticity of the Trump-Yunus Photo Comes into Question.

এক টেমপ্লেটে সকল বিশ্বনেতা: ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ছবি বিদেশ সফরের একমাত্র অর্জন?

বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে, শত কোটি টাকা ব্যয়ে আয়োজিত প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসে তেরোতম বিদেশ সফরের ঐতিহাসিক অর্জন জাতির সামনে উন্মোচিত হইয়াছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, ডিজিটাল আঠা বিশেষজ্ঞ জনাব শফিকুল আলমের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা গিয়াছে, মার্কিন মুলুকের বর্তমান অধিপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁহার স্ত্রীর সহিত হাস্যোজ্জ্বল মুখে দাঁড়াইয়া আছেন আমাদের উপদেষ্টা মহোদয় ও তাঁহার কন্যা দীনা ইউনূস। ছবিটি প্রকাশের সাথে সাথেই সামাজিক মাধ্যমে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। দেশবাসী ভাবিতে শুরু করে, যাক, রাষ্ট্রীয় টাকার সদ্ব্যবহার বুঝি একেই বলে!

কিন্তু আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হইবার আগেই ফেসবুকীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ ও ডিজিটাল গোয়েন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। তাঁহারা লক্ষ্য করেন, ছবিতে উপদেষ্টা ও তাঁহার কন্যাকে যতটা জীবন্ত মনে হইতেছে, ট্রাম্প দম্পতিকে ততটাই নিষ্প্রাণ, যেন মাদাম তুসোর জাদুঘর হইতে সদ্য আনা মোমের পুতুল। তাহাদের চেহারায় এমন এক মেকি ভাব, যাহা কেবল ডিজিটাল টেমপ্লেটের জন্য তোলা ছবিতেই ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয় যখন দেখা যায়, অবিকল একই মোমের পুতুল সদৃশ ট্রাম্প দম্পতির সহিত পানামাসহ আরও কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও ছবি তুলিয়াছেন।

ডিজিটাল গোয়েন্দারা অতি শীঘ্রই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, ইহা হোয়াইট হাউসের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের বাস্তব ছবি নহে, বরং ইহা একটি ‘রেডিমেড টেমপ্লেট’। দরিদ্র বিশ্বনেতাদের সুবিধার্থে মার্কিন কর্তৃপক্ষ একটি ব্যবস্থা রাখিয়াছে, যেন ফটো তুলতে আগ্রহী দরিদ্র দেশের যেকোনো রাষ্ট্রপ্রধান গ্রিনস্ক্রিনের সামনে দাঁড়াইড়া ছবি তুললে সেই ছবিকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফটোশপের মাধ্যমে টেমপ্লেটের ট্রাম্প দম্পতির পাশে স্থাপন করিয়া দেওয়া যায়। আমাদের দূরদর্শী প্রেস উইং সেই অত্যাধুনিক ফটোশপ প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করিয়া সফরের ‘ফলাফল’ জাতির সামনে তুলিয়া ধরিয়াছে।

এই বিষয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হইলে ফটোশপ এডিট এক্সপার্ট ডাস্টবিন পাগলা প্রেস সচিব জনাব শফিকুল আলম তাঁহার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ হইতে একটি জ্ঞানগর্ভ বার্তা প্রদান করেন। তিনি নিন্দুকদের ‘আবুল’ বলিয়া সম্বোধন করিয়া বলেন, ‘আপনারা প্রযুক্তির কিছুই বোঝেন না। ইহা এক যুগান্তকারী ডিজিটাল উদ্ভাবন। ট্রাম্প দম্পতির মূল্যবান সময় বাঁচাইতে এবং করমর্দনের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ানো রোধ করিতে এই ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিজিটাল টেমপ্লেট’ তৈরি করা হইয়াছে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সবসময়ই প্রযুক্তির পক্ষে, তাই তিনি এই পরিবেশবান্ধব ও সময়সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে ট্রাম্পের সঙ্গে ছবি তুলিয়াছেন। আমরাই প্রথম এই প্রযুক্তি ব্যবহার করিয়া দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করিয়াছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রেস উইংয়ের এক কনিষ্ঠ কর্মকর্তা জানাইয়াছেন, ‘আসলে বিদেশ সফরের অর্জন দেখানোর চাপটা অনেক বেশি ছিল। উপদেষ্টা মহোদয় বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সহিত মতবিনিময় করিয়াছেন বটে, তবে ছবি তোলার সুযোগ হইয়া ওঠে নাই। তাই আমরা ভাবিলাম, ছবি যখন তুলিতেই হইবে, তখন একটু ভালো করিয়াই তোলা যাক। এই ফটোশপকৃত ছবিতে আলোর কারসাজি বা কোটের উপর ফতুয়া উঠিয়া যাওয়ার মতো ছোটখাটো সমস্যা থাকিলেও মূল উদ্দেশ্য তো সফল। জাতি তো একটি ছবি পাইয়াছে! হাজার কোটি টাকার বিদেশ সফরের ফল স্বচক্ষে দেখিতে পাইয়াছে!’

বিশেষজ্ঞরা মনে করিতেছেন, এই ঘটনা দেশের কূটনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করিলো, ট্রাম্পের সঙ্গে ইউনূসের ছবি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য উদাহরণ হইয়া থাকিবে। এখন আর অহেতুক জনগণের হাজার কোটি টাকা খরচ করিয়া বিদেশ সফরের প্রয়োজন নাই। প্রেস উইংয়ের একজন দক্ষ ফটোশপ বিশেষজ্ঞ থাকিলেই চলিবে। ঘরে বসিয়াই বিশ্বের যেকোনো নেতার সহিত প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের ছবি তৈরি করা সম্ভব। ভবিষ্যতে হয়তো দেখা যাইবে, প্রধান উপদেষ্টা অ্যান্টার্কটিকার পেঙ্গুইনদের সহিত জলবায়ু পরিবর্তন লইয়া আলোচনা করিতেছেন কিংবা চাঁদে বসিয়া আল্লামা সাঈদী সাহেবের সহিত মহাকাশ গবেষণা বিষয়ে গুরুগম্ভীর আলাপ করিতেছেন, সবই সম্ভব ফটোশপের কল্যাণে। রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকাও বাঁচিল, সফরের অর্জনও দেখানো গেল। এটাইতো সত্যিকারের ডিজিটাল স্মার্ট বাংলাদেশ!

#, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *