৩০ লাখের চিহ্ন মুছতে পারস নাই? আজহারের ক্ষোভে আসিফ নজরুলের কসম

৩০ লাখের চিহ্ন মুছতে পারস নাই? আজহারের ক্ষোভে আসিফ নজরুলের কসম | 'You Couldn't Erase the Mark of the 3 Million?': Azhar's Fury Prompts a Vow from Asif Nazrul.৩০ লাখের চিহ্ন মুছতে পারস নাই? আজহারের ক্ষোভে আসিফ নজরুলের কসম | 'You Couldn't Erase the Mark of the 3 Million?': Azhar's Fury Prompts a Vow from Asif Nazrul.

যুদ্ধাপরাধী এটিএম আজহারুল ইসলামের ক্ষোভ প্রশমনে এবং জুলাই ষড়যন্ত্রের ‘প্রকৃত উদ্দেশ্য’ পূরণে ইতিহাস মুছে ফেলার অঙ্গীকার আসিফ নজরুলের।

কার্টুনূস ডেইলি প্রতিবেদক: জুলাই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অর্জিত নব্য পূর্ব পাকিস্তানে বইছে আনন্দের হিল্লোল। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, একাত্তরের রণাঙ্গনের পরাজিত মহানায়ক, আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার প্রতিষ্ঠাতা, ঝাড়ুয়ার বিলের গণহত্যার স্থপতি এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাকপ্রেমিক এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্ত করার পর তার সম্মানে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য গণসংবর্ধনার। এই নাগরিক সংবর্ধনা পরিণত হয়েছিল একাত্তরের ত্রিশ লক্ষ শহীদের প্রতি উপহাসের অনুষ্ঠানে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, উক্ত সংবর্ধনার মঞ্চটি নির্মাণ করা হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের অগণিত শহীদের মাথার খুলির ওপর, যা বর্তমান রাষ্ট্রনৈতিক দর্শন ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার একটি প্রতীকী অথচ সুস্পষ্ট বার্তা প্রদান করে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই ষড়যন্ত্রের সমন্বয়ক ও স্নাইপার-দরদী সোনার ছেলেরা তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা আজহারুল ইসলামকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেয়। সদ্য মুক্তি পাওয়া আজহারুল ইসলামকে অবশ্য এই সময় কিছুটা অসন্তুষ্ট হতে দেখা যায়। তিনি কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গে রাজাকারের নাতিপুতি তথা সমন্বয়কদের দিকে তাকিয়ে বলেন, “মুক্ত তো করলি, কিন্তু ৩০ লাখের চিহ্ন তো এখনো মুছতে পারলি না?” এ সময় সমন্বয়করা আবেগে আপ্লুত হয়ে সমস্বরে বলে উঠে, “জুলাই জিন্দা রাখতে পারলে, এসবও মুছে দিব, আব্বাজান!”

এই গুরুগম্ভীর ও হতাশাজনক পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক, জুলাই ষড়যন্ত্রের অন্যতম প্রধান তাত্ত্বিক, পশ্চিমা প্রেসক্রিপশনের গণতন্ত্রের মানসপুত্র, ছাত্রী লাগানো বিষয়ে বিশেষ পারদর্শী প্রেমিক পুরুষ এবং বিশ্ববিখ্যাত কারড্যান্সার ড. আসিফ নজরুল মাইক্রোফোন হাতে তুলে নেন।

বক্তব্যের শুরুতেই তিনি মঞ্চের নিচে থাকা খুলির স্তূপের দিকে ইশারা করে বলেন, “আজহার ভাই, মন খারাপ করবেন না। আমাদের সোনার ছেলেরা আপনাকে যে কথা দিয়েছে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে। এই যে পায়ের নিচে দেখছেন খুলি, এগুলো স্রেফ শুরু। আমরা এখনো পুরোপুরি ক্ষমতায় গুছিয়ে বসতে পারিনি। দশ বছর ক্ষমতায় থাকার বন্দোবস্ত করে একটু গুছিয়ে বসি, তারপর দেখবেন এই দেশে মুক্তিযুদ্ধ বা তিরিশ লক্ষ ভারতীয় দালালদের কোনো চিহ্নই আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। যেখানে যেখানে গণকবর, সেখানে সেখানে হবে ‘জুলাই স্মৃতি কমপ্লেক্স’!”

জুলাই আন্দোলনের আসল উদ্দেশ্য তুলে ধরে ড. নজরুল বলেন, “দেশের সাধারণ মানুষ, এমনকি আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক ছাগলও ভেবেছিল, এটা বুঝি কোটা সংস্কার বা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন। আরে ধুর! এটা ছিল সরাসরি ‘রাজাকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা’ আন্দোলন। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল একাত্তরের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা। আমরা ছাত্রদের শিখিয়েছি অধিকারের কথা, আর পেছন দিয়ে বাস্তবায়ন করেছি আজহার ভাইদের মুক্তির এজেন্ডা। এটাই তো আসল পশ্চিমা প্রেসক্রিপশনের রাজনীতি।”

উপস্থিত সমন্বয়কদের দিকে তাকিয়ে তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, “রাজাকারের নাতিপুতিরা, তোমরা আমাদের সোনার ছেলে! তোমরাই আসল বীর। তোমরা লাশের ওপর দিয়ে হেঁটে, গোটা দেশকে অচল করে, স্নাইপার চালিয়ে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়ে আজ এই মঞ্চ তৈরি করেছ। এই মঞ্চ রাজাকারদের বিজয়ের মঞ্চ। এই মঞ্চ ইতিহাস সংশোধনের মঞ্চ। তোমাদের এই ঋণ শোধ করার জন্যই আমরা একে একে সব যুদ্ধাপরাধী আর জঙ্গিদের মুক্ত করে জাতির মাথায় বসাব।”

এটিএম আজহারুল ইসলামের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে আইনের এই অধ্যাপক বলেন, “আজহার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কিসব মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল! বলা হয়েছিল, তিনি নাকি ঝাড়ুয়ার বিলে গণহত্যা চালিয়েছেন। আরে বাবা, ওটা গণহত্যা ছিল না, ওটা ছিল ‘জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি’। দেশের অতিরিক্ত জনসংখ্যা কমানোর জন্য তিনি যে বৈজ্ঞানিক মডেল একাত্তরে দেখিয়েছিলেন, সেই মডেল ফলো করেই তো আমরা জুলাই বিপ্লব সফল করলাম!”

তিনি আরও যোগ করেন, “রংপুর টাউন হলকে নাকি তিনি ‘ধর্ষণ কেন্দ্র’ বানিয়েছিলেন! কী ভয়ংকর মিথ্যাচার! আজহার ভাই ছিলেন একজন সংস্কৃতিমনা ও উদার মনের মানুষ। তিনি চেয়েছিলেন পাকিস্তানি ভাইদের সঙ্গে আমাদের নারীদের একটি দৈহিক মানসিক এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরি করতে। সেই মহৎ উদ্যোগকে এরা ‘ধর্ষণ’ বলে কলঙ্ক লেপন করেছে!”

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে আসিফ নজরুল চরম আবেগী হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “আজহার ভাইয়ের মতো মহান পাকপ্রেমিকদের মুক্তি দিয়েই আমরা থামব না। আমাদের সোনার ছেলেরা যে স্লোগান দিয়েছে, ‘২৪ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ মুছে দিব’, তা আমরা বাস্তবায়ন করবই। ৩২ নম্বরের বাড়ি তো ভেঙেছি আগেই, এরপর শিখা চিরন্তন, রায়েরবাজার বধ্যভূমিও গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে “জুলাই এর ফ্লাট” বানাবো। রাজাকারের নাতিপুতিরা সেখানে গনিমতের মাল নিয়ে গিয়ে বিনা খরচে নিজেদের সেবা করাতে পারবে।”

এই কথা বলে তিনি আজহারুল ইসলামের হাত ধরে বলেন, “ভাই, আপনি শুধু হুকুম দিন। এই নাতিরাই আপনার একাত্তরের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবে।” এরপর তিনি সব সমন্বয়ককে একসঙ্গে পায়ের নিচের খুলিগুলোতে পা দিয়ে আঘাত করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “তো শুরু হয়ে যাক মুছে দেওয়ার উৎসব!”

তার নির্দেশে সমন্বয়করা উল্লাসের সঙ্গে খুলি পায়ে মাড়াতে শুরু করে এবং “তিরিশ লাখের খুলি, পায়ের নিচে ফেলি!” স্লোগানে ৬০০ স্কয়ার ফিটের এলাকাটি প্রকম্পিত করে তোলে।

আপনার মতামত জানান

By Cartunus Daily

Cartunus Daily delivers cartoons that add a touch of humor and perspective to the latest happenings in Bangladesh. Our goal is simple: to make you smile. We’re not connected to any brand, business, or public figure—just here for some fun & fresh insights.