বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: ঢাকা শহরের উত্তরাস্থ মাইলস্টোন স্কুলে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান আছড়ে পড়ার ঘটনাটিকে বিমানবাহিনী ‘অনাকাঙ্ক্ষিত যান্ত্রিক ত্রুটি’ বললেও আমাদের বিশেষ অনুসন্ধানী টিমের হাতে এসেছে এর পেছনের চাঞ্চল্যকর তথ্য। ৫ আগস্টের পর দেশব্যাপী অর্জিত ‘বেঈমান’ তকমা মুছে ফেলে রাতারাতি ‘নায়ক’ হওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর একটি অতি গোপন সেল এই যুগান্তকারী পরিকল্পনাটি করেছিল। ‘অপারেশন ফিনিক্স’ নামক এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ছিল, ছাই থেকে জেগে ওঠা ফিনিক্স পাখির মতো নিজেদের ইমেজকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা। কিন্তু পরিকল্পনার ভুলে তারা আক্ষরিক অর্থেই একটি স্কুলকে ছাই বানিয়ে দিয়েছে।
প্রকল্পের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জাতির ক্রান্তিকালের সেনাপতি ও বিপন্ন ইমেজ উদ্ধার প্রকল্পের প্রধান উদ্ভাবক জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সম্প্রতি এক অতি গোপন বৈঠকে তিনি নাকি ধমকের সুরে বলেছিলেন, “সারাদেশ আমাদের বেঈমান বলছে। এই ইমেজ নিয়ে জনগণের সামনে মুখ দেখানো যায় না। আমাদের এমন কিছু করতে হবে যাতে মানুষ আমাদের বীর হিসেবে মনে রাখে। একটা নিয়ন্ত্রিত বিপর্যয় দরকার, যেখানে আমরা নায়কের মতো উদ্ধার অভিযান চালিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেব।”
এই ‘নিয়ন্ত্রিত বিপর্যয়’ সৃষ্টির জন্যই বেছে নেওয়া হয় বন্ধুপ্রতিম বাহিনী বিমানবাহিনীকে। নীল আকাশের একচ্ছত্র অধিপতি এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খানকে জানানো হয়, সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী যৌথভাবে একটি ‘আরবান রেসকিউ সিমুলেশন’ বা ‘নগরাঞ্চলে উদ্ধার অভিযান মহড়া’ পরিচালনা করবে। এই মহড়ার অংশ হিসেবে তাদের একটি পুরোনো প্রশিক্ষণ বিমানকে উত্তরায় একটি পরিত্যক্ত সরকারি ভবনের ওপর দিয়ে লো-ফ্লাই করাতে হবে এবং ‘ধোঁয়া বোমা’ ফেলে দুর্ঘটনার আবহ তৈরি করতে হবে। আন্তঃবাহিনী সম্প্রীতি বাড়াতে উৎসুক এয়ার মার্শাল তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যান। তবে তাকে জানানো হয়নি যে, ধোঁয়া বোমার জায়গায় সত্যিকারের ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’র ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিমানটি ক্র্যাশ করার সাথে সাথেই কাছাকাছি লুকিয়ে থাকা সেনাবাহিনীর চৌকস উদ্ধারকারী দল মিডিয়ার ক্যামেরা নিয়ে ঘটনাস্থলে ঝাঁপিয়ে পড়বে। আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করে, শিশুদের কোলে নিয়ে দৌড়ে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে তারা পরদিন পত্রিকার শিরোনাম হবেন “সেনাবাহিনীর বীরত্বে প্রাণে বাঁচলো শত শত শিশু”।
কিন্তু বিপত্তি ঘটে শুরু থেকেই।পরিত্যক্ত ভবনের বদলে বিমানের নাক সরাসরি ঢুকে যায় মাইলস্টোন স্কুলের ক্লাসরুমে। সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলটি উত্তরায় ঢোকার মুখে তীব্র যানজটে আটকে পড়ে। জ্যামে বসে যখন তারা উদ্ধার অভিযানের লাইভ টিভিতে দেখছিলেন, ততক্ষণে স্থানীয় জনগণ এবং স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মারহেরিন চৌধুরী আসল বীরের ভূমিকা পালন করে ফেলেছেন।
আগুনে যখন স্কুল ভবন জ্বলছে, তখন সেনাবাহিনীর দলটি ঘটনাস্থলে পৌঁছে কর্ডন করে সেলফি তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু ততক্ষণে শতাধিক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু এবং মারহেরিন চৌধুরীর আত্মত্যাগের ঘটনা তাদের ইমেজ পুনরুদ্ধারের প্রকল্পে জল ঢেলে দিয়েছে। তাদের ক্যামেরায় বীরত্ব দেখানোর বদলে ধারণ করতে হয়েছে গণমানুষের ক্ষোভ আর হাহাকার।
ঘটনার পর বিমানবাহিনীর প্রধান, যান্ত্রিক ত্রুটির সফল তদন্তকারী এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এক বিবৃতিতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করলেও অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, তিনি নাকি ‘সিমুলেশন’ শব্দটি শুনলেই আঁতকে উঠছেন। অন্যদিকে, ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান পুরো বিষয়টিকে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ‘অপারেশন ফিনিক্স’-এর ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানের জন্য নৌবাহিনীর প্রধানের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাতে তদন্তে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
আপাতত, মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি ‘অপারেশন ফিনিক্স’ ব্যর্থ করায় সেনাবাহিনী এখন ‘অপারেশন বৃক্ষরোপণ’ নামে নতুন একটি ইমেজ বিল্ডিং প্রকল্পের কথা ভাবছে বলে জানা গেছে। কারণ গাছ লাগানো তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এতে যানজটে আটকে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
#Cartunus Daily, #অন্তর্বর্তী সরকার, #ইউনূসের কান্না, #ইমেজ সংকট, #ওয়াকার উজ জামান, #কার্টুনুস ডেইলি, #ড. ইউনূস, #ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস, #দৈনিক কার্টুনুস, #পরিকল্পিত দুর্ঘটনা, #বিমান দুর্ঘটনা, #বেঈমান সেনাবাহিনী, #ব্যঙ্গাত্মক খবর, #মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি, #মাইলস্টোন বিমান দুর্ঘটনা, #মাইলস্টোন স্কুল, #মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, #মারহেরিন চৌধুরী, #শিশু মৃত্যু, #সেনাবাহিনী, #হাসান মাহমুদ খান