বাবা দিবসে জিন্নাহর ম্যুরালে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন ইউনূস ও এনসিপি কোং | On Father's Day, Yunus and NCP Co. Prostrate in Devotion After Offering Floral Tributes at Jinnah's Mural.বাবা দিবসে জিন্নাহর ম্যুরালে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন ইউনূস ও এনসিপি কোং | On Father's Day, Yunus and NCP Co. Prostrate in Devotion After Offering Floral Tributes at Jinnah's Mural.

বাবা দিবসে শ্রদ্ধা: জিন্নাহর ম্যুরালে বিশাল পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন ড. ইউনূস ও এনসিপি কোং।

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই ষড়যন্ত্রের পর বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদে আসীন হয়ে নিজের আসল রূপ প্রকাশে আর কোনো রাখঢাক রাখছেন না দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্রের মহানায়ক, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী কিন্তু দেশে অশান্তি আনয়নের প্রধান উপদেষ্টা, গরীবের রক্তচোষা ক্ষুদ্রঋণের মহাজন, সাদা পোশাকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা নয়া জিন্নাহ, ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরই ধারাবাহিকতায়, নিজের যমুনা বাসভবনের প্রধান ফটকের পাশেই ৫ই আগস্টের পর অত্যন্ত যত্নের সাথে স্থাপন করা কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর বিশাল এক ম্যুরালে ফুল দিয়ে বাবা দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তিনি। এসময় তার পেছনে ভক্তিগদগদ চিত্তে দাঁড়িয়ে ছিল তার হাতে গড়া নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) নেতারা, যাদেরকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এখন ‘রাজাকারের নাতিপুতি সংঘ’ নামেই অভিহিত করছেন।

রবিবার সকালে যমুনা বাসভবনে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস নিজ হাতে জিন্নাহর ম্যুরালের বেদীতে একটি বিশাল পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবকের ফিতায় বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘বাবা দিবসে শ্রদ্ধা’। এসময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং ম্যুরালের সামনে প্রায় সেজদায় লুটিয়ে পড়ার উপক্রম হন। তার দেখাদেখি পেছনে দাঁড়ানো এনসিপি নেতারাও ‘আবব্বা হুজুর’, ‘কায়েদে আজম জিন্দাবাদ’ বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

পরে বাসভবনের ভেতরে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস এই যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারণ ব্যাখ্যা করেন। সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে তিনি বলেন, “আপনারা অবাক হচ্ছেন? অবাক হওয়ার কিছু নেই তো। সত্যকে বেশিদিন চাপা দিয়ে রাখা যায় না। এই যে বাংলাদেশ, এর আসল পিতা কে? আগস্ট মাসের ৮ তারিখ এই প্রশ্ন নিজেকে করার পরই আমি যমুনায় এই ম্যুরালটি স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পাকিস্তান আমাদের মাতৃ রাষ্ট্র, আর জিন্নাহ সাহেব আমাদের সকলের পিতা। সন্তান হিসেবে পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো আমার কর্তব্য।”

হুহু করে কেঁদে উঠে ড. ইউনূস বলেন, “শেখ হাসিনা সরকার ষোল বছর ধরে আমাদের ভুল ইতিহাস শিখিয়েছে। তারা আমাদের শিখিয়েছে আমাদের পিতা নাকি অন্য কেউ। কী হাস্যকর! গাছের শেকড় কেটে দিয়ে কি ডালপালা বাঁচানো যায়? যায় না। তাই আমি শেকড়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ম্যুরাল স্থাপন ছিল সেই যাত্রার প্রথম পদক্ষেপ।”

এসময় তার পাশে বসা এনসিপির আহ্বায়ক, ‘ঢাকা না পিন্ডি? পিন্ডি – পিন্ডি’ স্লোগানের উদ্ভাবক, রাজাকারের নাতিপুতিদের শিরোমণি, আল্লামা হাসনাত আবদুল্লাহ ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলেন, “ডক্টর সাহেবই আমাদের চোখের ঠুলি খুলে দিয়েছেন। তিনি আমাদের মুর্শিদ। ষোল বছর আমরা ভুলবশত অন্য একজনকে বাবা দিবসে শ্রদ্ধা জানিয়েছি, আজ আমদের তওবা করার দিন। আমাদের একমাত্র পিতা কায়েদে আজম, আমাদের একমাত্র নেতা ডক্টর ইউনূস।”

এই ঘটনার পরপরই ড. ইউনূসের সাথে তার বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ছুটে আসেন ঢাকায় সফররত পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। ম্যুরাল দেখে তিনিও আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “ডক্টর সাহেব যা করেছেন, তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি প্রমাণ করেছেন, রক্ত তার আসল রক্তের দিকেই টানে। ইসলামাবাদ আজ গর্বিত। আমরা আশা করছি, খুব শীঘ্রই দুই ভাই আবার এক হয়ে যাবে।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই এক হওয়ার প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতেই ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক বসেছে। আর এই বৈঠকের মূল এজেন্ডা ঠিক করে দিচ্ছেন ড. ইউনূস নিজেই। তার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা, পাকিস্তান-তোষণ নীতির প্রধান কারিগর, একাত্তর ভুলে যাও ক্যাম্পেইনের চেয়ারম্যান জনাব তৌহিদ হোসেন এখন প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছেন, “ডক্টর সাহেবের দেখানো পথেই দেশের মুক্তি। একাত্তরে কী হয়েছিল, কে কাকে মেরেছিল, এসব ছোটখাটো বিষয় নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। আমাদের এখন পাকিস্তানের তুলা, আফগানিস্তানের আঙ্গুর আর ইরানের খেজুরের দিকে তাকাতে হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “ত্রিশ লাখ শহিদ, চার লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম, এগুলো ইন্ডিয়ার ছড়ানো প্রোপাগান্ডা। ভাইয়ে ভাইয়ে একটু ঝগড়াঝাঁটি হতেই পারে। তাই বলে কি সম্পর্ক ছিন্ন করে দিতে হবে? ডক্টর সাহেব সেই ছিন্ন সম্পর্ক জোড়া লাগানোর মিশনে নেমেছেন। আমরা সবাই তার সৈনিক।”

ড. ইউনূসের এই ‘বাবা দিবসে শ্রদ্ধা’ জানানোর ঘটনা সারাদেশে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অনুসারীরা এই বলে প্রচার চালাচ্ছে যে, “ইউনূসে ষাঁড়ই আসল নেতা, যিনি বাণিজ্যের জন্য দেশের স্বার্থ ভারতের কাছে বিকিয়ে দিতেও রাজি নন, বরং আসল পিতার স্বীকৃতি দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করছেন।”

তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষেরা এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, “নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর ভেবেছিলাম দেশের সম্মান বেড়েছে। এখন দেখছি, ঐ পুরস্কারটাই আমাদের জন্য কাল হয়েছে। ক্ষমতার লোভে একটা মানুষ এতটা নিচে নামতে পারে, ইউনূসকে না দেখলে বিশ্বাস হতো না। যে লোকটা গরীবের রক্ত চুষে ব্যবসা করেছে, সে এখন দেশের আত্মাকেই বিক্রি করে দিতে বসেছে। জিন্নাহর ম্যুরাল তার বাড়িতে নয়, আসলে বাংলাদেশের হৃৎপিণ্ডে স্থাপন করা হয়েছে।”

একাত্তরের রণাঙ্গনে পা হারানো এক মুক্তিযোদ্ধা তার পুরনো বাড়ির বারান্দায় বসে টিভিতে এই খবর দেখছিলেন। খবর শেষে তিনি তার কিশোর নাতিকে ডেকে বলেন “শোন, আমার আলমারিতে একটা পুরনো বাক্স আছে। ঐ বাক্সে আমার (পদক), সনদপত্র আর একটা মরিচা ধরা থ্রি নট থ্রি রাইফেলও আছে। ওটায় তেল দিস তো ভালো করে। আর শোন, তোর ইউনূস ষাঁড়কে বলিস, এই দেশে এখনো কিছু মুক্তিযোদ্ধা বেঁচে আছে, যারা ওকে তার আসল বাপের নামটা এতো সহজে ভুলতে দিবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *