আবরার ফাহাদ প্রতিবাদ করেছিল মাত্র ৫০০ টন ইলিশ পাঠানো নিয়ে। অথচ এখন যাচ্ছে ১২০০ টন।
বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: ডিজিটাল মহাফেজখানা ঘেঁটে পাওয়া গেল এক অমূল্য ‘ঐতিহাসিক’ দলিল! আর সেই দলিল পেয়েই অন্তর্বর্তীকালীন ‘পাকিস্তানপন্থী’ সরকারে আনন্দ আত্মহারা। দলিলটি আর কিছু নয়, ২০১৯ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর দেওয়া আবরার ফাহাদের একটি ফেসবুক পোস্ট, যেখানে তিনি বিদ্রূপ করে লিখেছিলেন, “ইনশাল্লাহ আগামী বছর একেবারে ১০০১ টন ইলিশ পাঠাবো।” ব্যস! পেয়ে গেলাম মোক্ষম হাতিয়ার, উল্লাসে ফেটে পড়লেন ইউনূস সরকারের নীতি নির্ধারকরা।
সূত্রের খবর, সদ্য ক্ষমতা দখলকারী নব্য রাজাকারদের ‘ইতিহাস ও সংস্কৃতি পুনরুদ্ধার সেলের’ স্বঘোষিত মহাপরিচালক, অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার পতিদেব, এবং সংস্কৃতি উপদেষ্টা আল্লামা বউ ব্যবসায়ী হুজুরে কেবলা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সম্প্রতি আবরার ফাহাদের ফেসবুক পোস্টটি আবিষ্কার করেন। তিনি তৎক্ষণাৎ এটিকে প্রিন্ট করে লাল ফাইলে ভরে গ্রামীন ব্যাংকের বিশ্ববিখ্যাত কিস্তিবাজ, জিরোতত্ত্বের কালজয়ী জনক ও মাইনাস সূত্রের আন্তর্জাতিক ফেরিওয়ালা, গণতন্ত্রের গোপন স্নাইপার ও সংস্কারের কসমেটিক সার্জন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের দরবারে পেশ করে বলেন, “স্যার, আমরা এতদিন ভুল পথে হেঁটেছি! আবরার ফাহাদ আসলে ইলিশ রপ্তানির বিরুদ্ধে ছিলেনই না! তিনি ছিলেন একজন মহান ভবিষ্যৎদ্রষ্টা। তিনি তার বিদ্রূপের আড়ালে আমাদের জন্য এক গোপন নির্দেশনা রেখে গেছেন। তিনি পরিষ্কার লিখেছেন, ‘১০০১ টন ইলিশ পাঠাবো’। এর আগে ‘ইনশাল্লাহ’ শব্দটিও ব্যবহার করেছেন। এটা তো এক প্রকার আধ্যাত্মিক সংকেত!”
এই ‘আধ্যাত্মিক’ আবিষ্কারের পর ড. মুহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব দ্বিধা কেটে গেছে। যে সরকার মুখে ভারত বিরোধিতার খই ফুটিয়ে জনগণের বাহবা কুড়াচ্ছিল, সেই সরকারই এখন আবরারের কাঁধে বন্দুক রেখে হাজার হাজার টন ইলিশ দেশবাসীকে বঞ্চিত করে ভারতে পাচার করছে। ‘মৎস্য ও দ্বিমুখী সম্পর্ক মন্ত্রণালয়’ থেকে একটি জরুরি পরিপত্র জারি করা হয়েছে, যার শিরোনাম: “আবরার ফাহাদের স্বপ্ন পূরণকল্পে ইলিশ রপ্তানি মহাযজ্ঞ-২০২৫”।
এই ঘটনায় প্রমাণিত হচ্ছে, আবরার ফাহাদদের সামনে রেখে বিগত সরকারের বিরুদ্ধে যে ‘দেশ বিক্রির’ মিথ্যাচার করা হয়েছিল, তা ছিল কতটা ভিত্তিহীন। বিগত সরকার ভারতের সাথে ন্যায্যতার ভিত্তিতে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিল, যা ছিল প্রকাশ্য ও স্বচ্ছ। আর বর্তমান সরকার মুখে ভারত বিরোধী সেজে, তলে তলে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য দেশের মানুষকে ইলিশ বঞ্চিত করে গোপনে ভারতকে খুশি করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আর এই ভণ্ডামি ঢাকতে তারা এখন আবরার ফাহাদের বিদ্রূপকে ‘রাষ্ট্রীয় দলিল’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
এদিকে, সরকারের এই ‘গূঢ়ার্থ’ আবিষ্কারে দেশের সচেতন নাগরিক ও প্রাক্তন আন্দোলনকর্মীদের মধ্যে হাসির রোল পড়েছে। আবরারের এক সহযোদ্ধা, যিনি সে সময় ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ৫০০ টনই বেশি’ স্লোগান দিয়েছিলেন, তিনি এখন কপালে হাত দিয়ে বলছেন, “এ কী দিন এলো! আমরা যার জন্য কাঁদলাম, যার বিদ্রূপকে প্রতিবাদের ভাষা বানালাম, সেই বিদ্রূপকেই আজ এরা নিজেদের অপকর্মের লাইসেন্স বানিয়ে ফেলেছে। আবরার ভাই যদি জানতেন তার একটা ফেসবুক পোস্ট এমন ‘মহৎ’ কাজে লাগবে, তাহলে হয়তো তিনি সেদিন হাসতে হাসতে মরে যেতেন, শিবিরের মার খেয়ে মরার দরকার হতো না।”
রাজধানীর এক বাজারে ইলিশের দিকে তাকিয়ে এক ক্রেতাকে আক্ষেপ করে বলতে শোনা গেল, “আগে ভাবতাম ইলিশ খাওয়া বিলাসিতা, এখন দেখি ইলিশের নাম নেওয়াও রাষ্ট্রদ্রোহিতা। কারণ, এই ইলিশ এখন আর আমাদের মাছ নয়, ইলিশ এখন ‘আবরার ফাহাদের রেখে যাওয়া আমানত’, যা ভারতে পৌঁছে দেওয়া এই সরকারের ‘পবিত্র দায়িত্ব’।”
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সরকার এখন আবরার ফাহাদের ফেসবুক প্রোফাইলের অন্যান্য পোস্ট থেকেও রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণের জন্য ‘গোপন সংকেত’ ও ‘গূঢ়ার্থ’ খুঁজে বের করার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠন করেছে। কে জানে, হয়তো তার কোনো এক পোস্ট থেকে হয়তো আগামীতে দেশের পানি নীতি বা বিদ্যুৎ নীতিও নির্ধারিত হতে পারে!
#১০০১ টন ইলিশ, #Cartunus Daily, #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, #আবরার ফাহাদ, #ইলিশ, #ইলিশ কূটনীতি, #ইলিশ রপ্তানি, #ইলিশ সংকট, #কার্টুনুস ডেইলি, #ক্ষমতার রাজনীতি, #ড. ইউনূস, #দৈনিক কার্টুনুস, #দ্বিমুখী নীতি, #ফেসবুক পোস্ট, #বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক, #বাংলাদেশ রাজনীতি, #ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, #ভারতে ইলিশ রপ্তানি, #রাজনৈতিক ভণ্ডামি, #শহীদ আবরার