লন্ডন সফরে ঐতিহাসিক অশ্বডিম্ব অর্জন, খুশিতে আত্মহারা ইউনূসীয় সাফাই সংঘ | Historic Horse Egg Achieved on London Tour, Yunusian Apologists Overjoyed with Happiness.লন্ডন সফরে ঐতিহাসিক অশ্বডিম্ব অর্জন, খুশিতে আত্মহারা ইউনূসীয় সাফাই সংঘ | Historic Horse Egg Achieved on London Tour, Yunusian Apologists Overjoyed with Happiness.

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিপুল অর্থ ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অশেষ মমতায় সিক্ত এক বর্ণাঢ্য পিকনিক, থুড়ি, ‘সরকারি সফর’ শেষে দেশে ফিরে এসেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান, গ্রামীণ ব্যাংকের বিশ্ববিখ্যাত কিস্তিবাজ, জিরোতত্ত্বের জনক ও মাইনাস সূত্রের ফেরিওয়ালা, গণতন্ত্রের স্নাইপার ও সংস্কারের কসমেটিক সার্জন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কারজাই। এগারোতম এই বিদেশ সফরে তিনি বিলাসবহুল হোটেলে সদলবলে অবস্থান করে জাতির জন্য একখানা সুবিশাল, গোলাকার ও মসৃণ ‘অশ্বডিম্ব’ অর্জন করেছেন বলে জানা গেছে। এই অভাবনীয় সাফল্যে দেশে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে এবং ‘ইউনূসীয় সাফাই সংঘ’ নামক একটি অরাজনৈতিক সংগঠন মিষ্টি বিতরণ করেছে।

সফর শেষে দেশে ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে সফরের অর্জন সম্পর্কে ড. ইউনূস কারজাই বলেন, “আপনারা খালি অর্জন অর্জন করেন কেন? সফরটাই তো একটা অর্জন। আমি যে গেলাম, এটাই তো বড় কথা। দেশের মানুষ দেখলো, আমি বিদেশেও কতটা জনপ্রিয়। আর আপনারা যেটাকে খালি চোখে অশ্বডিম্ব দেখছেন, সেটা আসলে খালি চোখে দেখার জিনিস নয়। এর ভেতরে লুকিয়ে আছে কূটনৈতীক কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট। এটা বোঝার জন্য আপনাদের আরও তিন হাজার বছর পড়ালেখা করতে হবে।”

তবে এই সফরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির বড় সাহেব ও দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বর্তমান ভাড়াটিয়া, স্যার কিয়ার স্টারমারের সাথে বৈঠক। সফরের আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে জানানো হয়েছিল যে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবতা ও পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে যুগান্তকারী আলোচনা হবে। কিন্তু লন্ডনে পৌঁছানোর পর দেখা গেল, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎদানে অপারগতার এক মহান স্থাপত্য নির্মাণ করে বসে আছেন।

এই বিব্রতকর পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, ডাহা মিথ্যার পাইকারি বিক্রেতা, আমতা আমতা বিদ্যার গোল্ড মেডালিস্ট, ডাস্টবিন পাগলা জনাব শফিকুল আলম প্রথমে জানান, “ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আসলে কানাডায় এক গোপন মিশনে আছেন।” কিন্তু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যখন ফাঁস করে দেয় যে, স্টারমার সাহেব তখন লন্ডনেই নিজের বাসায় বসে চা-বিস্কুট খাচ্ছেন, তখন প্রেস সচিব নতুন তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন। তিনি বলেন, “আসলে কী জানেন, বড় মাপের মানুষদের দেখা হয় ইশারায়। তাঁরা চোখে চোখ রেখে কথা বলেন না। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যখন হোটেলের জানালা দিয়ে ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে তাকিয়েছেন, আর ওদিক থেকে স্টারমার সাহেব যখন নিজের ঘরের জানালায় পর্দা টেনে দিয়েছেন, এই পর্দা টানাটানির মধ্যেই দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। আপনারা এসব বুঝবেন না।”

সাবেক এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে কানের কাছে মুখ এনে বলেন, “আরে ধুর! এইটা ডাস্টবিন শফিকুলের চাপাবাজি! একটা দেশের সরকার প্রধান রাষ্ট্রীয় সফরে এসে অন্য দেশের সরকার প্রধানের দেখা পাবে না, এটা চরম অপমান। এইটারে বলে ‘কূটনৈতিক কলা’। ইংল্যান্ড সরকার বাংলাদেশের অবৈধ প্রধান উপদেষ্টাকে কলা দেখিয়ে দিল আরকি!”

তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেলেও এই সফরের এক ‘গোপন’ উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে জানা গেছে। লন্ডনে তিনি বৃহত্তর জামায়াতে ইসলামীর সাবেক বিএনপি শাখার আওলাদে আমীর, ডিজিটাল তারবার্তা প্রেরক ও ওয়ান-ইলেভেনের মাল্টিপারপাস ভিকটিম, পলাতক যুবরাজ তারেক রহমানের সাথে এক ‘দ্বিপাক্ষিক’ বৈঠকে মিলিত হন। দেশের ভেতরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুজন যখন লন্ডনের বিলাসবহুল হোটেলে বসে আলোচনা করছিলেন, তখন হোটেলের বাইরে দাঁড়ানো এক ব্রিটিশ নাগরিক অবাক হয়ে বলেন, “বাপরে! বাংলাদেশের রাজনীতি তো দেখি আন্তর্জাতিক ডেলিভারি সার্ভিস খুলে বসেছে! দেশ থেকে সমস্যা পার্সেল করে লন্ডনে পাঠানো হয়, এখানে বসে সমাধান করে আবার রিটার্ন করা হয়!”

এই বৈঠকের বিষয়ে ইউনূসীয় সাফাই সংঘের চেয়ারম্যান, দিনে ‘সম্প্রীতি’ এবং রাতে ‘সম্মতি’তে নারী নেত্রীদের লাগাতে ইচ্ছুক মহান সাধক, জাতীয় রাজনীতিতে ‘লাগানোর’ গুরুত্ব অনুধাবনকারী একমাত্র দার্শনিক,  জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আপনারা কিছুই বোঝেন না। এটাই তো মাস্ট্রারস্ট্রোক! ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আমাদের উপদেষ্টাকে সময় না দিয়ে বুঝিয়েছেন যে, এখন থেকে বাংলাদেশের বিষয়ে কথা হবে তাদের নির্ধারিত প্রতিনিধির (তারেক রহমান) মাধ্যমে। এটা আমাদের উপদেষ্টার প্রতি এক বিশাল সম্মান। তিনি এখন শুধু সরকার প্রধান নন, তিনি এখন ‘কিংমেকার’-এর সাথে বৈঠক করা কিংবদন্তী!”

এদিকে এই সফরে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেও রাষ্ট্রীয় খরচে পিকনিক করানো হয়েছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে তাদের ভূমিকা কী ছিল, এই প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা লন্ডনের প্রতিটি শপিং মলে পাচার হওয়া অর্থ খুঁজেছি। ডিএনএ টেস্ট করে দেখেছি কোনো টাকায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেখা আছে কি না। পাইনি। তবে ফেরার সময় কিছু ভালো সুভেনির পেয়েছি। এটাও তো দেশের জন্য এক প্রকার অর্জন।”

এই সফরের আরও একটি অর্জন হলো ‘কিংস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ। যদিও কিংস ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় ইউনূস কারজাইয়ের নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। এ বিষয়ে ইউনূসীয় সাফাই সংঘের চেয়ারম্যান সারোয়ার তুষার বলেন, “যারা তালিকা খুঁজে পাচ্ছে না, তাদের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল। আমাদের উপদেষ্টার নাম অদৃশ্য কালি দিয়ে লেখা আছে। রাজা চার্লস নিজে ফোন করে বলেছেন, ‘ইউনূস, তোমার নামটা এতই উজ্জ্বল যে তালিকায় রাখলে অন্যদের নাম ম্লান হয়ে যাবে। তাই তোমার নামটা হৃদয়ে লিখে রাখলাম।’ এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কী হতে পারে?”

সর্বোপরি, প্রায় দশ মাসে ১১টি দেশ সফর করে ৩০০ কোটি টাকার অধিক অর্থ ব্যয় করে অধ্যাপক ইউনূস যে পরিমাণ অশ্বডিম্ব দেশের জন্য সংগ্রহ করেছেন, তা দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের ‘অশ্বডিম্ব জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রতিটি সফর শেষে তাঁর দালালরা সেই ডিম্বকে এমনভাবে সাফল্যের প্রলেপ দিয়ে চকচকে করে তোলেন যে, সাধারণ মানুষ ভাবে, বুঝি কোহিনূর হীরা নিয়ে আসা হয়েছে।

এই লন্ডন সফর শেষেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যদিও বাস্তবতা হলো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অপমান, অ্যাওয়ার্ড নিয়ে ধোঁয়াশা এবং পলাতক আসামীর সাথে বৈঠক ছাড়া এই সফরের দৃশ্যমান কোনো অর্জন নেই। কিন্তু ইউনূসীয় সাফাই সংঘের মতে, এই অশ্বডিম্বই হলো আগামী দিনের বাংলাদেশের সমৃদ্ধির সোপান। তাদের দাবি, এই ডিমেই তা দিয়ে একদিন গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সুশাসনের বাচ্চা ফোটানো হবে। তবে সেই বাচ্চা ফুটতে আরও কত হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় পিকনিক প্রয়োজন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *