কেন বেগুনই এনসিপির জন্য আদর্শ প্রতীক, এনসিপিকে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ
বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: নির্বাচনি প্রতীক বরাদ্দের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘রক্তাক্ত শাপলা’ প্রতীকের দাবির বিপরীতে তাদের জন্য বেগুন, বালতি, খাটসহ একগুচ্ছ ‘অন্তরঙ্গ’ প্রতীকের তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে সংস্থাটি। ইসির এই সিদ্ধান্তে দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মহলে আনন্দের বন্যা বইলেও, এনসিপি শিবির এই ‘বেগুন প্রস্তাবে’ তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা অতীতে পুলিশের শাপলা খচিত লোগোকে রক্তে রঞ্জিত করার যে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রচনা করেছে, সেই স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে তারা শাপলা প্রতীক চায়। তাদের আবেদনে গোলাপী, সাদা এমনকি পিংক রঙের শাপলার বিকল্পও রাখা হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের এই শাপলাপ্রীতিতে সাড়া না দিয়ে বরং এমন কিছু প্রতীকের প্রস্তাব দিয়েছে, যা এনসিপিকে তাদের রাজনৈতিক দর্শনের গভীরে সহজেই প্রবেশ করাতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক বেগুন ব্যবহারকারী সংস্থার সম্মানীত চেয়ারপার্সন এবং প্রতীক গবেষক জুলি বেগম বলেন, “নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত ও যুগোপযোগী। এনসিপির জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারতো না। শাপলা তো থাকে জলে, ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু বেগুন? বেগুন হলো জনগণের একেবারে অন্দরমহলের প্রতীক। এর কোনো রাখঢাক নেই, কোনো ভনিতা নেই। এটি আকারে, গুণে এবং ব্যবহারে এতটাই বৈচিত্র্যময় যে, যেকোনো পরিস্থিতিতেই তা জনগণের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।”
তিনি তাঁর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একটি মসৃণ বেগুন বের করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখাতে দেখাতে বলেন, “এর আবেদন বহুমাত্রিক। এটি একাধারে পুষ্টি ও তুষ্টির জোগান দেয়। এনসিপির নেতারা যদি এই প্রতীকের মর্ম বুঝতে পারেন, তাহলে তাদের আর নারী ভোটারদের মন জয় করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। ভোটাররাই তাদের কাছে ছুটে আসবে।”
তবে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “আমাদের রক্তাক্ত ইতিহাসের সাথে এই তেলতেলে জিনিস যায় না। তাছাড়া আমার ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। আমার তো বেগুন মুখে দিলেই সর্বাঙ্গে আগুন ধরে যায়, অ্যালার্জিতে শরীর লাল হয়ে যায়। যে জিনিস আমাদের শরীরে সহ্য হয় না, তাকে প্রতীক বানাবো কীভাবে?”
নাহিদ ইসলামের এই ‘এলার্জি-তত্ত্ব’ শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েন বেগম জুলি। তিনি বলেন, “অবাক কাণ্ড! উনারা রাজনীতির ‘র’ও বোঝেন না, বেগুনের ‘ব’ও বোঝেন না। আরে বাবা, সবকিছু কি মুখে দিতে হয়? কিছু জিনিসের ব্যবহারিক জ্ঞান না থাকলে যা হয় আরকি! আমি তো বলি, উনার চুলকানি আর অ্যালার্জির সমস্যাটা মানসিক। বেগুনের সঠিক ও নিরাপদ ব্যবহার জানলে এই সব চুলকানি এক রাতেই সেরে যায়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি এনসিপির সকল নেতাকে আমার পক্ষ থেকে বিনামূল্যে ‘বেগুনের সঠিক ব্যবহার’ শীর্ষক একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। সেখানে আমরা শেখাবো, কোন সাইজের বেগুন কোন কাজে লাগে এবং কীভাবে ব্যবহার করলে চুলকানি বা অ্যালার্জির কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। আশা করি, এই কর্মশালার পর তারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন, নির্বাচন কমিশন তাদের জন্য কত বড় একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।”
এদিকে নির্বাচন কমিশনের একটি গোপন সূত্র জানিয়েছে, তাদের ‘প্রতীক মনোবিশ্লেষণ বিভাগ’ এনসিপির নেতাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে, তাদের মধ্যে তীব্র একাকীত্ব ও রাজনৈতিক অতৃপ্তি কাজ করছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ‘বেগুন থেরাপি’ সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারে বলে বিভাগটি সুপারিশ করেছে। তাদের মতে, এই প্রতীকটি একাকীত্ব দূর করে রাজনৈতিক জীবনে নতুন উদ্দীপনা আনতে সক্ষম।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, এনসিপি নেতারা কোনো কর্মশালায় অংশ নিতে রাজি নন এবং তারা শাপলার দাবিতে অনড়। তবে এনসিপিকে নির্বাচন কমিশনের পরামর্শ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফলিত প্রতীকবিজ্ঞান’ বিভাগের এক ছাত্র নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, “এনসিপি আসলে হীরা চিনতে ভুল করছে। বেগুন একই সাথে নান্দনিক ও ব্যবহারিক দ্বৈত সত্তার অধিকারী একটি প্রতীক। তারা এই সুযোগ হারালে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।”
#৩ হাজার পুলিশ হত্যা, #Cartunus Daily, #অনড় অবস্থানে নির্বাচন কমিশন, #এনসিপি, #এনসিপি বেগুন, #এনসিপিকে বেগুন প্রতীক, #কার্টুনুস ডেইলি, #চুদলিংপং, #জাতীয় নাগরিক পার্টি, #দৈনিক কার্টুনুস, #নির্বাচন কমিশন, #নির্বাচনী প্রতীক, #পুলিশ হত্যা, #বাংলাদেশ রাজনীতি, #বেগুন প্রতীক, #বেগুন প্রতীক ইসির রুচিবোধের প্রকাশ, #রম্য প্রতিবেদন, #রাজনৈতিক রম্য, #রাজনৈতিক স্যাটায়ার, #শাপলা প্রতীক, #শাপলার দাবিতে অনড় এনসিপি