যাহার লাগি করি কর্ম, সেই কাটিতে উদ্যত চর্ম: নিরাপত্তা শঙ্কায় জাহেদ উর রহমান
বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: অবশেষে তিনি মুখ খুলিয়াছেন। তবে এই মুখ খোলা কোনো নির্বাচনের স্বচ্ছতা বা গণতন্ত্রের গভীরতা লইয়া নহে, বরং নিজের গর্দান লইয়া। নির্বাচনব্যবশা সংস্কার কমিশনের সদস্য, বুদ্ধিবৃত্তিক মহলের অন্যতম দিকপাল এবং পাকিস্তানপন্থী জামায়াত নিয়ন্ত্রিত বর্তমান অবৈধ সরকারের আগমনের নেপথ্যের কারিগর জাহেদ উর রহমান মহাশয় সম্প্রতি নিজের নিরাপত্তা লইয়া গুরুতর শঙ্কা প্রকাশ করিয়াছেন। শনিবার নিজ বাসভবনের নিরাপদ দূরত্ব হইতে স্বীয় ইউটিউব চ্যানেলে এক মর্মস্পর্শী ভিডিওবার্তায় তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান। তাহার এই ঘোষণায় জামায়াতপন্থী বুদ্ধিজীবী মহলে আনন্দের বন্যা বহিয়া যাইতেছে। অনেকেই বলিতেছেন, ‘বিপ্লব তাহার সন্তানদের খাইতে শুরু করিয়াছে, ইহাই তো প্রকৃত বিপ্লবের লক্ষণ!’
ভিডিওবার্তায় অশ্রুসজল নয়নে জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘আমি আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা লইয়া হুমকিবোধ করিতেছি। এই নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি মূলত জামায়াত-শিবিরের দিক হইতে আসিতেছে।’ তাহার এই উক্তিতে দেশের আপামর জনতা কিঞ্চিৎ বিস্মিত হইয়াছে। সচেতন নাগরিক সমাজের একজন প্রতিনিধি, চা-দোকানি আব্দুল বারেক বিস্ময় প্রকাশ করিয়া বলেন, ‘যিনি একটি বৈধ সরকারকে হঠাইয়া জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত একটি পবিত্র ও পুণ্যবান সরকার আনিবার জন্য টাকার বস্তা গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া শোনা যায়, তিনি আবার জামায়াতকে ভয় পাইবেন কেন? জামায়াত তো উনার অকৃত্রিম বন্ধু হইবার কথা।’
জানা যায়, সম্প্রতি একটি বিদেশি গণমাধ্যমের টক শোতে জামায়াতের আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার এএসএম শাহরিয়ার কবির, জাহেদ উর রহমানকে ‘নাস্তিক’ এবং ‘ইসলাম বাতিলকারী’ হিসাবে অভিহিত করেন। এই ‘খেতাব’ প্রাপ্তির পরই মূলত নিজের ভবিষ্যৎ লইয়া চিন্তিত হইয়া পড়েন জাহেদ উর রহমান। ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমাকে সরাসরি নাস্তিক বলা হইয়াছে। বাংলাদেশে কাহাকেও নাস্তিক ট্যাগ দেওয়ার অর্থ হইল, তাহাকে কতলযোগ্য করিয়া তোলা।’ তাহার এই কথায় হাসির রোল পড়িয়া গিয়াছে ফেসবুক পাড়ায়। হাসিবুল হোসেন শান্ত নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করিয়াছেন, ‘যিনি নিজে পেট্রল ঢালিয়া আগুন জ্বালাইয়াছেন, তিনি এখন আগুনের তাপে কষ্ট পাইলে চলিবে?’
ঘটনার গভীরে গিয়া জানা যায়, জাহেদ উর রহমান ও তাহার সমমনা বুদ্ধিজীবীগণ দীর্ঘদিন ধরিয়া দেশে একটি ‘ইসলামী রেনেসাঁ’ আনিবার জন্য কাজ করিয়া যাইতেছিলেন। তাহাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ও ডিপ স্টেটের আর্থিক সহযোগিতায় দেশে অবশেষে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত একটি ‘সোনার সরকার’ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। কিন্তু গোল বাধিয়াছে অন্য জায়গায়। জামায়াত এখন তাহাদের ‘ইসলামী শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করিয়াছে। আর সেই অভিযানের প্রথম বলি হইতে পারেন বলিয়া আশঙ্কা করিতেছেন স্বয়ং জাহেদ উর রহমান।
এই বিষয়ে নব্য সরকারের একজন প্রভাবশালী শুভাকাঙ্ক্ষী, ‘হেফাজতে জামায়াত’–এর আমির নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ডা. জাহেদ সাহেব আমাদের পরম শ্রদ্ধার পাত্র। তাহার মতো বুদ্ধিজীবীর কারণেই আমরা আজ আলোর মুখ দেখিয়াছি। টক শোতে উনাকে ‘নাস্তিক’ বলাটা আসলে কোনো হুমকি নহে, ইহা এক প্রকার ঈমানী পরীক্ষা। আমরা শুধু দেখিতে চাহিতেছি, আমাদের আদর্শের প্রতি তিনি কতটা অবিচল। এই পরীক্ষায় পাশ করিতে পারিলে উনাকে হয়তো “আমিরে বুদ্ধিজীবী” পদে নিয়োগ দেওয়া হইতে পারে।’
এদিকে জাহেদ উর রহমানের নিরাপত্তা শঙ্কাকে ‘নাটক’ বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন অনেকে। তাহাদের মতে, যে জাহেদ উর রহমান একটি গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করিয়া দেশকে পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরাইয়া আনিবার মিশনে নেতৃত্ব দিয়াছেন, তিনি এখন সামান্য ‘নাস্তিক’ ট্যাগে ভয় পাইতেছেন, ইহা বিশ্বাসযোগ্য নহে। ইহা হয়তো পশ্চিমা প্রভুদের নিকট নিজের নিরাপত্তা ঝুঁকি প্রদর্শন করিয়া একটি বিদেশি টিকিট জোগাড় করিবার পাঁয়তারা।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ডা. জাহেদ উর রহমান নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পরবর্তী ভিডিওর জন্য ‘নিরাপত্তা শঙ্কায় ভীত না হইয়া উত্তোরনের দশটি উপায়’ বিষয়ক একটি স্ক্রিপ্ট লিখিতেছিলেন। তবে জামায়াত-শিবির তাহার এই শিক্ষামূলক ভিডিওটিকে কীভাবে গ্রহণ করিবে, তাহাই এখন দেখিবার বিষয়।
#Cartunus Daily, #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, #ইসলামবিদ্বেষী, #কার্টুনুস ডেইলি, #জামায়াত শিবির, #জীবননাশের হুমকি, #ডা. জাহেদ উর রহমান, #দৈনিক কার্টুনুস, #নাস্তিক ট্যাগ, #নিরাপত্তা শঙ্কা, #পাকিস্তানপন্থী, #পাকিস্তানপন্থী রাজনীতি, #বাংলাদেশ রাজনীতি, #রাজনৈতিক বিশ্লেষক, #রাজনৈতিক রম্য