দুর্নীতির পাঠশালায় ফেল শিশু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ! মাত্র ২০ কোটি টাকার দুর্নীতির সংবাদে ক্ষুব্ধ গুরু ইউনূস, নগর ভবন থেকে জিহাদ ঘোষণা ইশরাকের।
নিজস্ব প্রতিবেদক: মাত্র ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পে অত্যন্ত আনাড়ির মতো দুর্নীতি করতে গিয়ে ধরা পড়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম নবীন সদস্য, ‘জুলাই ষড়যন্ত্রের নবজাতক বিবেক’ এবং ‘জাতির কচি কান্ডারী’ আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার উপর হিরোশিমার আণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী ক্রোধ বর্ষণ করেছেন তার আধ্যাত্মিক গুরু, শান্তিতে নোবেলজয়ী অশান্তির জনক, ক্ষুদ্রঋণের আড়ালে বৃহৎ লোপাটের গ্র্যান্ডমাস্টার, অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস। এদিকে, গুরুর বকা খেয়ে আসিফের নাস্তানাবুদ অবস্থার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঢাকা দক্ষিণের স্বঘোষিত পাহারাদার, খোকা সাহেবের ড্যাশিং আওলাদ, বাপকা বেটা সিপাইকা ঘোড়া, ইঞ্জিনিয়ার আল্লামা ইশরাক হোসেন, নগর ভবন থেকেই ‘ইউনূসীয় মাফিয়া চক্রের’ বিরুদ্ধে এক সর্বাত্মক জিহাদের ঘোষণা দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ‘ডক্টর ইউনূসের কনিষ্ঠতম শিষ্য’ আসিফ মাহমুদ গাজীপুরে একটি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে মাত্র ২০ কোটি টাকা লোপাট করতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে ধরা পড়েন। এই খবর পাওয়া মাত্রই ইউনূস সেন্টারের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ‘দুর্নীতি গবেষণা সেল’ থেকে জরুরি তলব করা হয় আসিফকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনূস সেন্টারের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী জানান, “গুরুজি সেদিন এমন রেগেছিলেন যে তার হ্রদয়ের তাপমাত্রা দিয়ে দশটা নোবেল পুরস্কারও গলিয়ে ফেলা যেত। তিনি আসিফকে তার ত্রিমাত্রিক হলোগ্রাম প্রজেক্টরের সামনে দাঁড় করিয়ে বলেন, ‘তোমাকে না আমি আমার লেখা ‘The Art of Social Business & The Science of Silent Looting’ বইটার পিডিএফ পাঠিয়েছিলাম? বই না পড়ে পরীক্ষা দিতে গেলে ফেল তো করবেই!’”
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ইউনূস সাহেব তার হিমশীতল কক্ষে বসে শান্ত অথচ বরফশীতল গলায় আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে বলেন, “আসিফ, তুমি শুধু আমাকে হতাশ করোনি, তুমি দুর্নীতির মহান শিল্পকে অপমান করেছ। দুর্নীতি হলো ব্যালে নৃত্যের মতো; নিঃশব্দ, সুন্দর ও শৈল্পিক। আর তুমি করেছ তাণ্ডব নৃত্য! আমি তোমাকে শিখিয়েছিলাম ‘মিনিমাম ইনভেস্টমেন্ট, ম্যাক্সিমাম লোপাট’ মডেল, আর তুমি কি না মাত্র ২০ কোটির জন্য পুরো দেশের মিডিয়ার সামনে ধরা খেলে! তোমার এই কেলেঙ্কারির ROI (Return on Insult) অনেক বেশি। আমরা খুঁজি হাই রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট, রিটার্ন অন ইনসাল্ট নয়!”
এদিকে মঙ্গলবার নগর ভবনের মেয়র কার্যালয়ে মেয়রের আসনে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আল্লামা ইশরাক হোসেন বলেন, “এই দেশটা কি মগের মুল্লুক? একজন শিশু, যার এখনো ভালো করে দুধের দাঁতও পড়েনি, সে কিনা ২০ কোটি টাকা মেরে দেওয়ার সাহস দেখায়! আমার বাবা যখন মেয়র ছিল, তখন এই ছেলে লেংটা হয়ে রাস্তায় মার্বেল খেলত। আজ সে হয়েছে উপদেষ্টা! আর উপদেষ্টা হয়েই দুর্নীতির বিশ্বরেকর্ড গড়ে ফেলছে, কিন্তু আমাকে শপথ পড়ানোর সময় পাচ্ছে না।”
আবেগাপ্লুত হয়ে খোকা সাহেবের ড্যাশিং আওলাদ আরও বলেন, “আপনারা ভাবছেন আমি কেন নগর ভবন দখল করে বসে আছি? আমি বসে আছি এই পবিত্র ভবনকে আসিফের মতো দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। আমি হলাম এই নগরীর অতন্দ্র প্রহরী। আমার ভয়েই তো সে গত একমাস কোন দুর্নীতি করতে পারেনি। যেই আমি কোরবানির বর্জ্য অপসারণ নিয়ে একটু ব্যস্ত হয়েছি, সেই সুযোগে সে গাজীপুরে গিয়ে ২০ কোটি টাকা সাবাড় করে দিয়েছে। ”
এদিকে ইশরাকের এমন মারমুখী আচরণে যারপরনাই বিব্রত বোধ করছেন শিশু উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বসে তিনি সাংবাদিকদের কাছে কাঁদো কাঁদো স্বরে বলেন, “দেখুন, আমি বারবার বলছি, আর চুপ থাকার মতো পরিস্থিতি নেই। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনছে না। ইশরাক সাহেব একজন সম্মানিত ব্যক্তি, বাপকা বেটা, সিপাইকা ঘোড়া। তবে তার কাছ থেকে আমরা আরও পরিপক্ব আচরণ আশা করেছিলাম। তিনি নগর ভবন দখল করে রেখেছেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এতে নগরবাসীর সেবা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সামনে ডেঙ্গু আর কোভিডের মৌসুম। আর তিনি কিনা এমন সংকটকালীন সময়ে, হাজার কোটি দুর্নীতি করে ফেলা আমার বিরুদ্ধে মাত্র ২০ কোটির অভিযোগ আনছেন! আরে ভাই, ২০ কোটি টাকা দিয়ে আজকাল কী হয়? একটা ভালো ফ্ল্যাটও তো কেনা যায় না।”
উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে পুনরায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক। তিনি নগর ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেন, “ওই দেখুন! চোরের মায়ের বড় গলা! সে স্বীকার করছে ২০ কোটি দিয়ে কিছু হয় না। তার মানে তার টার্গেট আরও বড়। সে লক্ষ কোটি টাকা মারার ধান্দায় আছে। সেটাও নাহয় আমি না দেখার ভান করে থাকতাম যদি আমাকে সে মেয়র পদে শপথ পড়াতো! যদিও শপথ পড়িনি, কিন্তু তাতে কী? আমিই এই নগর ভবনের মেয়র। সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা আমার সঙ্গে আছে। প্রয়োজনে আমি তাদেরকে নিয়ে আসিফ মাহমুদের বাড়ির সামনে অবস্থান নেব এবং তাকে ঘেরাও করে রাখব, যতক্ষণ না তিনি পদত্যাগ করছেন। এসময় ইশরাক উত্তেজিত ভঙ্গিতে বলতে থাকেন, শপথ নাহয় পদত্যাগ, শপথ নাহয় পদত্যাগ।”
ঘটনা পর্যবেক্ষণে থাকা খ্যাতনামা চৈনিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক, এবং ‘আওলাদে মাও’ খ্যাত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “এটা হলো টাকার অঙ্কের লড়াই। যখন ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তখন একজন আরেকজনের দুর্নীতির ফাইলপত্র প্রকাশ করে দেয়। ইশরাক সাহেব হয়তো ভেবেছিলেন, নগর ভবন দখল করলেই কাজ শেষ। কিন্তু শিশু উপদেষ্টা তার চেয়েও এক কাঠি সরেস। সে নীরবে নিভৃতে হাজার কোটি টাকা খেয়ে ফেলেছে। এখন ইশরাক সাহেবের উচিত ছিল আসিফের দুর্নীতির অর্ধেক ভাগ চেয়ে বসা। কিন্তু তিনি তা না করে সরাসরি পদত্যাগ চেয়ে বসলেন। এখানেই তিনি শিশুতোষ রাজনীতি করলেন।”
এই অচলাবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা পড়েছি মহাসংকটে। উপদেষ্টা আসিফ সাহেব ইমেইলে নির্দেশ দেন, ‘নগর ভবন থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করুন’। আর ইশরাক সাহেব অফিসে এসে নির্দেশ দেন, ‘অফিসের চেয়ার-টেবিল দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করুন, দুর্নীতিবাজ উপদেষ্টাকে ঢুকতে দেবেন না’। আমরা এখন কার কথা শুনব? তাই আমরা সবাই মিলে ঠিক করেছি, যতক্ষণ না এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে, আমরা নগর ভবনের ছাদে বসে লুডু খেলব।”
সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, অধ্যাপক ইউনূস একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে পেশাদারিত্বের বড় অভাব। তারা কোনো কাজই শৈল্পিকভাবে করতে পারে না। আমি ভাবছি, তরুণ রাজনীতিবিদ ও উপদেষ্টাদের জন্য ‘টেকসই লোপাট ও সামাজিক দুর্নীতি’ শীর্ষক একটি কর্মশালার আয়োজন করব।”
এই ঘোষণার পর উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সেই কর্মশালায় প্রথম ছাত্র হিসেবে নাম লিখিয়েছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ঘোষণা দিয়েছেন, ওই কর্মশালা যেখানেই হোক না কেন, তিনি তার কর্মী বাহিনী নিয়ে সেখানে হামলা চালাবেন এবং যারা তাকে মেয়র শপথ পড়াচ্ছেন না তাদের হাতেকলমে উত্তম-মধ্যম প্রশিক্ষণ দেবেন। এই ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে ঢাকা শহরের নাগরিকরা এখন চরম উত্তেজনার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তারা অপেক্ষা করছেন, এই রাজনৈতিক সার্কাসের শেষ অংকে কে জেতে ক্ষুদ্রঋণের গুরু, আনারি শিষ্য, নাকি নগর ভবনের স্বঘোষিত টার্মিনেটর।