
ফেনী বন্যা ২০২৪ ও ত্রাণের টাকা দূর্নিতি: মেটিকুলাস ডিজাইন থেকে উঠে আসা এনসিপি নেতাদের আড়ালের গল্প।
বাংলাদেশে যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস আসে, তখন সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কিন্তু একদল নব্য রাজনৈতিক নেতার জন্য এই দুর্যোগই যেন আশীর্বাদ! ২০২৫ সালের বন্যার আশঙ্কায় যখন দেশবাসী শঙ্কিত, তখন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে পরিচিত নব্য পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক বন্দোবস্তের নেতারা পুরোনো সাফল্যের পুনরাবৃত্তির আশায় উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের এই আনন্দের পেছনে লুকিয়ে আছে এক চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির ইতিহাস, যা নিয়ে কার্টুনুস ডেইলি নির্মাণ করেছে এই বিশেষ রম্য প্রতিবেদন।
এর প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে, যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এই নেতারাই মানুষের আবেগকে পুঁজি করে ফেনী বন্যার বন্যার্তদের জন্য প্রায় ১১ কোটি টাকা ত্রাণ সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে সেই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায় গেল, তার কোনো স্বচ্ছতা পাওয়া যায়নি। অভিযোগ ওঠে, ত্রাণের টাকায় কেনা হয়েছে বিলাসবহুল গাড়ি, যা নেতাদের ব্যক্তিগত প্রচারণায় ব্যবহৃত হচ্ছে। আল্লামা হাসনাত ‘গাড়িওয়ালা’ আবদুল্লাহর মতো নেতারা তখন ‘তহবিল সুরক্ষিত আছে’ এবং ‘অডিট রিপোর্ট আসছে’ বলে জনগণকে আশ্বস্ত করলেও সেই রিপোর্ট আজও আলোর মুখ দেখেনি।
এক বছর পর, নতুন বন্যার পূর্বাভাস পেয়ে সেই নেতারাই আবার মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাদের কাছে বন্যা মানে দুর্গত মানুষের হাহাকার নয়, বরং তহবিল সংগ্রহের নতুন একটি ‘ব্যবসা উৎসব’। পুরোনো দানবাক্সগুলো ঝেড়ে-মুছে, আরও আবেগঘন কান্নার মহড়া দিয়ে তারা প্রস্তুত হচ্ছেন জনগণের পকেট থেকে কোটি টাকা খসানোর নতুন মিশনে। তাদের ভাষায়, এটি নিছকই ‘জনসেবা’, কিন্তু আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল উদ্দেশ্য হলো নিজেদের বিলাসবহুল জীবনযাপন ধরে রাখা।
এই প্রতিবেদনে আমরা ব্যঙ্গ ও বিদ্রূপের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতির নৈতিক অবক্ষয়, ত্রাণ তহবিল নিয়ে দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক নেতাদের জবাবদিহিহীনতার মতো গুরুতর বিষয়গুলোকে ফুটিয়ে তুলেছি। আমাদের উদ্দেশ্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে আক্রমণ করা নয়, বরং সমাজের অসঙ্গতিগুলোকে রম্যরসের মাধ্যমে দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা, যা তাদের ভাবতে সাহায্য করবে। এই প্রহসনের শেষ কোথায়? জনগণের বিশ্বাস কি প্রতি বছর এভাবেই ভাঙতে থাকবে?