বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের দপ্তর হইতে প্রেরিত জরুরি প্রতিবাদলিপি
বিষয়: আমার মেয়ের স্পেস স্টেশন ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ।
প্রিয় দেশবাসী, বিশ্ববাসী, এবং মঙ্গল গ্রহের বিবেকবান বাসিন্দাগণ,
আমি, মেটিকুলাস ডিজাইনের মাধ্যমে গভর্নর পদে অধিষ্ঠিত, অর্থনীতিতে ‘কান্না-কাটি’ থিওরির জনক এবং শ্বশুরকুল শিরোমণি আল্লামা আহসান এইচ মনসুর, আজ এক ভগ্ন হৃদয় ও ক্ষুব্ধ আত্মা লইয়া আপনাদের সামনে কলম ধরেছি। সম্প্রতি কতিপয় ফেসবুক-ভিত্তিক গোয়েন্দা এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী চক্র আমার ও আমার মেয়ের বিরুদ্ধে যে ৪৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাট বিষয়ক মিথ্যা, বানোয়াট, ও সম্পূর্ণরূপে গাঁজাখুরি অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাহার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাইবার ভাষা আমার জানা নাই।
সর্বপ্রথম আমি পরিষ্কার ভাষায় জানাইতে চাই, দুবাইয়ের পাম জুমেইরাহ-তে আমার মেয়ের নামে যাহা রহিয়াছে, তাহা কোনো ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট নহে। ইহা একটি অতি গোপন, টপ সিক্রেট, অত্যাধুনিক, হাই-টেক, মাল্টি-ডাইমেনশনাল স্পেস স্টেশন, যাহা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে ‘অপারেশন ডেজার্ট ডলার’ নামক প্রকল্পের অধীনে নির্মিত হইয়াছে। এই স্পেস স্টেশন হইতে আমরা গোটা বিশ্বের ডলারের গতিবিধি, সোনার দামের ওঠানামা, এমনকি কোন দেশের প্রেসিডেন্ট কোন ব্র্যান্ডের শরাবান তহুরা পান করিতেছেন, তাহার উপরও তীক্ষ্ণ নজরদারি করি। এই প্রকল্পের গোপনীয়তা রক্ষা করা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষারই সামিল।
আমার কন্যা, মহীয়সী মেহরিন সারা মনসুর, যাহাকে আপনারা ‘বিলাসী নারী’ বলিয়া অপমান করিতেছেন, সে আসলে এই স্পেস স্টেশনের সর্বোচ্চ কমান্ডার। তাহার সাংকেতিক নাম ‘পাপা কি পারী’। তাহার জীবনযাপন কোনো বিলাসিতা নহে, বরং শত্রুপক্ষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য একটি নিপুণ ‘কভার-আপ’। আপনারা যেটিকে ৬১ লক্ষ টাকার নেকলেস বলিয়া প্রচার করিতেছেন, তাহা প্রকৃতপক্ষে একটি ‘গ্যালাকটিক কমিউনিকেটর’, যদ্বারা সে সরাসরি আইএমএফের প্রেসিডেন্টের সহিত যোগাযোগ করিয়া থাকে। আর তাহার ১২ লক্ষ টাকার ব্যাগটি কোনো সাধারণ ব্যাগ নহে, উহার ভিতরে এই উপমহাদেশের সকল পারমাণবিক বোমার গোপন কোড রহিয়াছে। আমার মেয়ে নিজের কাঁধে পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি লইয়া ঘোরে, আর আপনারা তাহার ফ্যাশন লইয়া কথা বলেন? আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত!
জনৈক ষড়যন্ত্রকারী দাবি করিয়াছে যে, সে নাকি আমাদের স্পেস স্টেশনের স্যাটেলাইট ডিশে আমার মেয়ের জামাতার অন্তর্বাস শুকাইতে দেখিয়াছে। ইহা একটি নির্লজ্জ মিথ্যাচার এবং জঘন্য অপপ্রচার! ওইটি কোনো সাধারণ অন্তর্বাস নহে, উহা ছিল অ্যান্টি-ম্যাটার ফ্যাব্রিকের তৈরি একটি ‘সিগন্যাল জ্যামার’ যাহা শত্রুপক্ষের গোয়েন্দা স্যাটেলাইটকে অন্ধ করিয়া দেয়! আমার জামাতা দেশের জন্য নিজের অন্তর্বাস পর্যন্ত উৎসর্গ করিয়াছে, আর তাহাকে লইয়া এই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য?
এখন আসি টাকার প্রসঙ্গে। এই স্পেস স্টেশন নির্মাণে বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে একটি টাকাও পাঠানো হয় নাই। সকল অর্থ আইএমএফের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের গোপন ভল্ট হইতে ‘কোয়ান্টাম মানি টেলিপোর্টেশন’ প্রযুক্তির মাধ্যমে আলোর গতিতে দুবাইতে প্রেরণ করা হইয়াছে। ইহা একবিংশ শতাব্দীর এক সাধারণ ব্যাংকিং প্রযুক্তি, যাহা কেবল আমার মতো উঁচু মাপের অর্থনীতিবিদেরাই বোঝেন।
আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন লইয়া কিছু বলিতে চাহি না। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা যখন আমাকে ‘দুর্নীতিবাজ পিতা’ বলিয়া আখ্যা দেয়, তখন আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আমি দেশবাসীকে সাক্ষী রাখিয়া বলিতে চাই, এই আমি গত তিন বছরে আমার একমাত্র কন্যা ‘পাপা কি পারী’কে একটি আস্ত জামাও কিনিয়া দিই নাই। ইসলামপুরের ফুটপাত হইতে এক গজ ছেঁড়া মার্কিন কাপড় কিনিয়া দিয়াছিলাম, যাহা দিয়া আমার গুণবতী মেয়ে নিজের হাতে সেলাই করিয়া একটি পোশাক বানাইয়াছে। কারণ সে জানে, তাহার পিতা দেশের টাকা বাঁচাইতে কতটা বদ্ধপরিকর। আমরা বাপ-বেটি মিলিয়া যে কৃচ্ছ্রসাধন করি, তাহা দেখিলে স্বয়ং গৌতম বুদ্ধও আসিয়া আমাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিতেন।
তাই আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, এই সকল ফেসবুকীয় ষড়যন্ত্রকারীদের কথায় কান দিবেন না। ইহারা বিদেশি শক্তির এজেন্ট। ইহারা আমাদের ‘মানি টেলিপোর্টেশন’ প্রযুক্তি চুরি করিতে চায়। ইহারা চায় আমার মেয়ের পারমাণবিক কোড সম্বলিত ব্যাগটি ছিনতাই করিতে।
আসুন, আমরা সকলে মিলিয়া আমাদের স্পেস স্টেশন ও তাহার একমাত্র নারী কমান্ডারকে রক্ষা করি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হই।
আপনাদেরই সার্বভৌমত্ব-রক্ষক,
আল্লামা আহসান এইচ মনসুর
গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক।