চাঁদাবাজিতে বৈপ্লবিক সংস্কার, গুলশান থেকে সরাসরি রুপায়নে যাচ্ছে ‘সার্ভিস চার্জ’

চাঁদাবাজিতে বৈপ্লবিক সংস্কার, গুলশান থেকে সরাসরি রুপায়নে যাচ্ছে ‘সার্ভিস চার্জ’। Revolutionary reforms in extortion, 'service charge' goes directly from Gulshan to Rupayan. চাঁদাবাজিতে বৈপ্লবিক সংস্কার, গুলশান থেকে সরাসরি রুপায়নে যাচ্ছে ‘সার্ভিস চার্জ’। Revolutionary reforms in extortion, 'service charge' goes directly from Gulshan to Rupayan.

বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: ঐতিহ্যবাহী চাঁদাবাজিকে মান্ধাতা আমলের বিশৃঙ্খল প্রক্রিয়া থেকে উদ্ধার করে একটি সুসংগঠিত, স্মার্ট ও কর্পোরেট শিল্পে রূপান্তর করার ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়েছে হালের কচি জমিদারদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল বিকালে গুলশানের এক পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত ‘স্মার্ট ডোনেশন: ফ্রম স্ট্রিট টু স্যুট’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এই বৈপ্লবিক সংস্কার মডেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের মঞ্চ আলো করে বসেছিলেন এনসিপির থিঙ্কট্যাংক, স্মার্ট ডোনেশন পদ্ধতির রূপকার ও ডিজিটাল বাংলাদেশের এনালগ জমিদার, জনাব নাহিদ ইসলাম। তার পাশে ডলারের উজ্জ্বল্যে মুখমণ্ডল আরও উজ্জ্বল করে বসেছিলেন দলের নবগঠিত ‘কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স’ বিভাগের মহাসচিব, গুলশান-বনানী অঞ্চলের প্রধান ‘সার্ভিস চার্জ’ কালেক্টর ও রুপায়ন ভবনের অবৈতনিক উপদেষ্টা, জনাব আসিফ মাহমুদ।

শুরুতেই মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আপনারা জানেন, আমরা পরিবর্তনে বিশ্বাসী। বিএনপি-আমলের মতো ছিঁচকে চাঁদাবাজি, টোকেন দিয়ে টাকা তোলা, কিংবা ব্যবসায়ীদের দোকানে দোকানে গিয়ে ক্যাশ কালেকশন করার মতো আদিম প্রথা আমরা বাতিল করেছি। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভয় পায়। আমরা চাঁদাবাজিকে সম্মানজনক পেশায় পরিণত করতে একটি ‘সেন্ট্রালাইজড কালেকশন সিস্টেম’ চালু করেছি।”

তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, “আগে চাঁদাবাজির কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ছিল না। এখন আমরা বিষয়টিকে একটি ‘সার্ভিস’-এর আওতায় নিয়ে এসেছি। ব্যবসায়ীরা আমাদের ‘উন্নয়ন সহযোগী ফি’ বা ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস চার্জ’ দেবেন, বিনিময়ে আমরা তাদের নির্বিঘ্নে ব্যবসা করার নিরাপত্তা দেব। এটা কোনোভাবেই চাঁদা নয়, এটা হলো ‘সিকিউরিটি সার্ভিস চার্জ’।”

এরপর বক্তব্য দিতে আসেন আজকের অনুষ্ঠানের মধ্যমণি, ‘ভাগা মাহমুদ’ খ্যাত আসিফ মাহমুদ। তিনি একটি পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন চালু করে বলেন, “ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহিলাগণ, আসুন আমরা ডেটা দেখি। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, আগের সরকারের আমলে চাঁদাবাজির সিস্টেম লস ছিল প্রায় ৬০ শতাংশ। টাকা মাঠকর্মী থেকে বড় নেতা পর্যন্ত পৌঁছাতে পৌঁছাতে অর্ধেক হয়ে যেত। আমরা এই সিস্টেম লসকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছি।”

স্লাইডে একটি গ্রাফ দেখিয়ে তিনি বলেন, “দেখুন, আমাদের নতুন মডেলে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী নেই। আমরা সরাসরি কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের সাথে ‘এমওইউ’ বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করছি। টাকা এখন আর বস্তায় ভরে পাঠানো হয় না, সরাসরি ডলারে কনভার্ট হয়ে আমাদের ডেজিগনেটেড পার্টনারদের অ্যাকাউন্টে চলে যায়। আমাদের এই মডেলে স্বচ্ছতা শতভাগ।”

এ পর্যায়ে একজন সাংবাদিক ভাইরাল হওয়া কার্টুনটি দেখিয়ে প্রশ্ন করেন, “তাহলে ছবিতে যে বলা হচ্ছে, ‘চাঁদা নেই গুলশানে, ভাগ যায় রুপায়নে’ এই ভাগের ব্যাপারটা কী?”

প্রশ্ন শুনে বিজয়ের হাসি দিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, “চমৎকার প্রশ্ন! এটাই তো আমাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র। এখন আর আগের মতো রাস্তা ঘাটে কোনো ঝামেলা নেই। চাঁদা নেই গুলশানে, ভাগ যায় রুপায়নে! রুপায়ন ভবনই আমাদের কেন্দ্রিয় ব্যাংক, আমাদের ‘স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার’। তারা আমাদের ‘কালেকশন ও ম্যানেজমেন্ট’ পার্টনার হিসেবে কাজ করছে। আমরা দেশের সকল বড় বড় কর্পোরেট হাউসকে আমাদের ‘সিকিউরিটি নেটওয়ার্ক’-এর আওতায় নিয়ে আসছি। এটা একটা উইন-উইন সিচুয়েশন। তাদের ব্যবসাও চলছে, আমাদের দেশসেবাও চলছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা এখন আর টাকায় ডিল করি না। বুঝতেই পারছেন, টাকার মানে আগের মতো নেই। আমরা এখন ডলারে ‘সার্ভিস চার্জ’ দিচ্ছি। এতে দেশের রিজার্ভও শক্তিশালী হচ্ছে। আমরা দেশপ্রেমিক, তাই দেশের অর্থনীতির কথা আমাদেরই ভাবতে হয়।”

সংবাদ সম্মেলন শেষে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের মধ্যে এনসিপির নতুন ‘সার্ভিস চার্জ প্যাকেজ’ বিতরণ করা হয়। প্যাকেজে ‘সিলভার’, ‘গোল্ড’ ও ‘প্ল্যাটিনাম’ এই তিন ধরনের সেবা গ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। ‘প্ল্যাটিনাম’ প্যাকেজের গ্রাহকরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ছাড়াও মাসে একবার এনসিপির শীর্ষ নেতাদের সাথে গলফ খেলার সুযোগ পাবেন বলে জানানো হয়। এই যুগান্তকারী ঘোষণায় দেশের ব্যবসায়িক মহলে স্বস্তির নিঃশ্বাস বইছে বলে জানা গেছে।

#, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *