নিজস্ব কার্টুনুস প্রতিবেদক: জুলাই ষড়যন্ত্রের পর প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ২.০তে বইছে আনন্দের হিল্লোল। চারিদিকে শুধু সমন্বয় আর সংস্কারের সুবাতাস। এই অভাবনীয় সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে রাজাকারদের সুযোগ্য নাতিপুতিদের দ্বারা গঠিত ইসলামি রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’। তাদের উদ্ভাবিত ‘সমন্বয় মডেল’ আজ দেশের প্রতিটি সেক্টরে এমন এক বিপ্লব এনেছে যে, জনগণ উত্তেজনায় রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছে—কখনো যানজটে, কখনোবা বর্জ্যের স্তূপে।
এই যুগান্তকারী ‘সমন্বয় মডেল’-এর মূল কারিগর, বৃহত্তর পঞ্চগড়ের কৃতি সন্তান, ছাত্রলীগের লুঙ্গির তলে লুকানো সাবেক হেলমেট পাগলা এবং বর্তমান জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক ও আমীরে ‘সমন্বয়ক’, আল্লামা সারজিস আলম এক সংবাদ সম্মেলনে তার সাফল্যের রহস্য উন্মোচন করেছেন। অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি বলেন, “আপনারা আমাদের ভুল বুঝছেন। আমরা কোনো চাঁদাবাজি করছি না। আমরা কেবল জাতির স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ‘সমন্বয় চেকপোস্ট’ বসিয়েছি। আমাদের কর্মীরা গরুর ট্রাক থামিয়ে চালকের ওয়ালেটের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। ওয়ালেটের ‘ভিটামিন-স’ (সমন্বয়) কমে গেলে আমরা সামান্য ফি নিয়ে তা পূরণ করে দিচ্ছি। এটা এক ধরনের জনসেবা। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে, তরুণদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। একে আপনারা চাঁদাবাজি বলেন কোন আক্কেলে?”
আল্লামা সারজিস আলমের এই বক্তব্যে উপস্থিত সাংবাদিকরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
ঈদ যাত্রা না ‘চলমান পরিবার পরিকল্পনা’ প্রকল্প?
এবারের ঈদ যাত্রায় মানুষ যে অবর্ণনীয় ‘সুখ’ পেয়েছে, তার পুরো কৃতিত্ব জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব এবং আগা মোটা গোড়া চিকন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেক্স সমন্বয়ক, ডা. তাসনিম জারার। মহাখালী থেকে গাজীপুরের সোয়া ঘণ্টার পথ মাত্র চার ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়ায় দেশজুড়ে প্রশংসার বন্যা বইছে।
এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় ডা. তাসনিম জারা হুহু করে কেঁদে ফেলে বলেন, “আপনারা শুধু ভোগান্তিটাই দেখলেন, এর পেছনের গভীর দর্শনটা বুঝলেন না। আমাদের দলের লক্ষ্যই হলো পারিবারিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা। যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের ভেতর আটকে থেকে যাত্রীরা একে অপরের সাথে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে, দোতলা বাসের অন্ধকার কেবিনে কোয়ালিটি টাইম কাটাচ্ছে। এটা আমাদের যুগান্তকারী ‘চলমান পরিবার পরিকল্পনা’ প্রকল্প। আমরা পরিবারগুলোকে আরও বেশি সময় একসাথে রাখার জন্যই রাস্তার গতি নিয়ন্ত্রণ করছি। আপনারা এটাকে যানজট বলছেন?”
তিনি আরও যোগ করেন, “রাস্তায় একটু খোঁড়াখুঁড়ি না থাকলে কি সংস্কারের আমেজ আসে? আমরা চাই, জনগণ যেন প্রতিটি মুহূর্তে সংস্কারের ঝাঁকুনি অনুভব করে। এই যে ভ্যা ভ্যা করে মানুষ কাঁদছে, এ তো আনন্দের কান্না। এমন আনন্দ তারা বিগত ১৭ বছরেও পায়নি।”
এ সময় মিরপুর থেকে আসা অতিমাত্রায় বিজ্ঞানপ্রেমী, কারও কাছে বিজ্ঞানবাদী, কারও কাছে আবার সুপারহিউম্যান বিজ্ঞান লেখক নাঈম হোসেন ফারুকী নামক এক যাত্রী, যিনি ৭ ঘণ্টায় মাত্র ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন, তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দেওয়ার আগেই আনন্দে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। উপস্থিত এনসিপি নেতা কর্মীরা একে ‘সংস্কারের শক’ বলে আখ্যায়িত করেন।
বর্জ্য নয়, ‘আরবান স্যাভানা’ প্রকল্প!
ঈদুল আযহার বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেও ‘সমন্বয় মডেল’ এনেছে এক নীরব বিপ্লব। ঈদের দুই দিন পরেও যখন শহরের অলিগলিতে কোরবানির বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, তখন অনেকেই একে ব্যর্থতা বলে প্রচার করার চেষ্টা করে। কিন্তু এই অপপ্রচারের দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন রাজধানী ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নবনিযুক্ত প্রশাসক এবং ‘বর্জ্য থেকে অর্গানিক বার্গার’ প্রকল্পের উদ্ভাবক, মোহাম্মদ এজাজ।
ঈদের দিন সন্ধ্যায় যখন তার কর্মীরা মাঠের কাজ ফেলে রেখে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সেই সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, “এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি। ওনারা কাজ ফেলে আসেননি, বরং ‘লাইভ অ্যাকশন রিপোর্টিং’-এর মাধ্যমে নিজেদের কাজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে এসেছিলেন। ঘরে বসে দায়িত্ব পালন না করেও শতভাগ সাফল্যের দাবি করা, এটা একটা আধুনিক ম্যানেজমেন্ট কৌশল। আমরা কর্মীদের হাতে-কলমে সেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা যাকে বর্জ্য বলছেন, আমরা তাকে বলছি ‘আরবান অর্গানিক ম্যাটার’। আমরা শহরকে একটা ‘আরবান স্যাভানা’ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই বর্জ্য প্রাকৃতিকভাবে পচে গিয়ে মাটির উর্বরতা বাড়াবে। আগামী বছর আমরা এই রাস্তাগুলোতেই অর্গানিক সবজি চাষ করে বিদেশে রপ্তানি করব। এতে দেশের ডলার সংকট কেটে যাবে। আপনারা দুই দিনের বর্জ্য নিয়ে এত হৈচৈ করছেন, কিন্তু এর পেছনের শতবর্ষী পরিকল্পনা দেখতে পাচ্ছেন না। কী আজব!”
এ সময় মগবাজারের এক বাসিন্দা, যার বাসার সামনে গরুর আস্ত ভুঁড়ি দুই দিন ধরে পচছে, তিনি এই যুগান্তকারী পরিকল্পনা শুনে আবেগে সেখানেই বায়ো-গ্যাস উৎপাদন শুরু করেন।
আপনার মতামত জানান