একটি ফোন কলের অপেক্ষা, অতঃপর ডিভোর্স: সাদিক কায়েমের নিজের দরজা আজীবনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলো ইলিয়াস হোসাইন!
বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: ইতিহাসের পাতায় অনেক যুদ্ধ, অনেক বিজয় লেখা থাকে স্বর্ণাক্ষরে। কিন্তু কিছু বিজয় এমন বিষাদের ছায়া নিয়ে আসে, যা মহাকাব্যের ট্র্যাজেডিকেও হার মানায়। সম্প্রতি সমাপ্ত হওয়া ডাকসু নির্বাচনে নবনির্বাচিত ভিপি সাদিক কায়েমের বিজয় তেমনি এক ট্র্যাজেডির জন্ম দিয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিজয়ী সাদিক কায়েম একটি ফোনও করেননি তার রাজনৈতিক গুরু, অনুপ্রেরণার বাতিঘর এবং এক সময়ের নয়নের মণি, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মহীরুহ ইলিয়াস হোসাইনকে। আর এই একটি ফোন কলের অভাবেই ভেঙে চুরমার হয়ে গেল একটি সাজানো সংসার, ইতি ঘটল এক ঐতিহাসিক প্রেমের। চরম অভিমানে সাংবাদিক ইলিয়াস সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সাদিকের জন্য তার দরজা আজীবনের জন্য বন্ধ। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক ডিভোর্স কার্যকর হয়ে গেছে।
ঘটনার সত্যতা জানতে এক অনুসন্ধানী ফেক আইডির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনের এক নিকটাত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “ভাইয়ের (ইলিয়াস) অবস্থা ভালো না। নির্বাচনের আগে-পরে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। নিজের খেয়ে, নিজের পরে সাদিকের জন্য ডিজিটাল ময়দানে একাই একশ হয়ে লড়েছে। ‘পাকিস্তানি প্রার্থী’র মতো ঝুঁকিপূর্ণ ট্যাগলাইন নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল কেবল সাদিক কায়েমকে জেতানোর জন্য। আর সেই ছেলেটা জিতেই সব ভুলে গেল? একটা কল, শুধু একটা কল দিতে পারল না? ভাইয়ের মনে যে কত বড় ব্যথা লেগেছে, তা কেবল আমরাই জানি।”
জানা গেছে, ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই সাংবাদিক ইলিয়াস তার মুঠোফোনটি বুকে জড়িয়ে বসেছিলেন। ফোনের চার্জ একশ ভাগ নিশ্চিত করা, নেটওয়ার্কের বার বার পরীক্ষা করা, এমনকি হোয়াটস্যাপ খুলে বারবার অনলাইন স্ট্যাটাস চেক করা – কোনো কিছুতেই কমতি রাখেননি তিনি। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন পেরিয়ে গেলেও সাদিকের সেই কাঙ্ক্ষিত ফোন আসেনি। তার নীরব মুঠোফোন যেন ইলিয়াসের ভাঙ্গা হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল।
নিজের ফেসবুক লাইভে এসে এক বুক অভিমান নিয়ে অশ্রুসজল চোখে ইলিয়াস হোসেন বলেন, “সাদিক, তোর জন্য কী না করেছি! নিজের আরাম-আয়েশ, ঘুম সব হারাম করে দিয়েছিলাম। কত বাঘা বাঘা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে তুলোধুনো করেছি! জামায়াত শিবিরকে বড় করে প্রচার করেছি! বিএনপির চোখের ঘুম হারাম করেছি! আর তুই ভিপি হয়েই আমাকে ভুলে গেলি? একটা ফোন দিতে তোর কয় মিনিট লাগত? তোর কি পয়সা ছিল না? আমাকে বলতি, আমি ফ্লেক্সিলোড করে দিতাম। আমার হৃদয়ের বাম পাশে তোর নামের যে ট্যাটু করে রেখেছি, আজ সেটা আগুনের ছ্যাঁকার মতো যন্ত্রণা দিচ্ছে। এই ট্যাটুর এখন কী হবে?”
এদিকে, এই বিচ্ছেদের খবরে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অনেকেই এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। নির্বাসিত বুদ্ধিজীবী ও সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ হেকিম পিনাকী ভট্টাচার্য তার ভেরিফায়েড পেজ থেকে উভয়কে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আহা, তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত নিও না। সাদিক এখন ব্যস্ত মানুষ। হয়তো কাজের চাপে ফোন দিতে পারছে না। তোমরা আবার এক হয়ে যাও। প্রয়োজনে একটা রাজনৈতিক হিল্লা বিয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।”
তবে পিনাকীর এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন ইলিয়াসের ঘনিষ্ঠ মহল। তাদের ভাষ্যমতে, “বিশ্বাসঘাতকতার কোনো ক্ষমা নেই। যে মানুষ বিজয়ের মুহূর্তে তার সবচেয়ে কাছের মানুষকে ভুলে যায়, তার সাথে আর কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। ইলিয়াস ভাইজান চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। এখন তিনি ট্যাটু রিমুভালের জন্য ভালো লেজার ক্লিনিক খুঁজছেন।”
সারা দেশের ডিজিটাল জনতা এখন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে, এই শতাব্দীর সেরা রাজনৈতিক ডিভোর্সের শেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। সাদিক কায়েম কি তার ভুল বুঝতে পেরে ফোন দিয়ে বন্ধ দরজা খুলতে পারবে? নাকি সাংবাদিক ইলিয়াস নতুন কোনো রাজনৈতিক সঙ্গীর সন্ধানে নামবেন? সেই উত্তর সময়ই বলে দেবে।