‘চাঁদা’ বলায় কর্মীর কানমলা, ডোনেশন-হাদিয়া শিখতে এনসিপির নতুন একাডেমি!

‘চাঁদা’ বলায় কর্মীর কানমলা, ডোনেশন-হাদিয়া শিখতে এনসিপির নতুন একাডেমি! Worker's Ears Twisted for Saying 'Chanda'; NCP's New Academy to Teach Donation-Hadiya! ‘চাঁদা’ বলায় কর্মীর কানমলা, ডোনেশন-হাদিয়া শিখতে এনসিপির নতুন একাডেমি! Worker's Ears Twisted for Saying 'Chanda'; NCP's New Academy to Teach Donation-Hadiya!

বিশেষ প্রতিবেদক, দৈনিক কার্টুনুস: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনৈতিক দর্শনে ‘চাঁদা’ শব্দটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দলের কোনো কর্মী, সমর্থক বা নেতা যদি ভুলবশত এই শব্দটি উচ্চারণ করেন, তবে তার জন্য অপেক্ষা করছে কঠোর ‘শুদ্ধাচার’ শাস্তি। কর্মীদের ‘সঠিক শব্দচয়ন’ ও ‘সুকুমার সংগ্রহ’ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষিত করতে গুলশানের এক সুরম্য অট্টালিকায় সম্প্রতি যাত্রা শুরু করেছে ‘এনসিপি ডোনেশন, হাদিয়া ও এয়ানত প্রশিক্ষণ একাডেমি’।

এই একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বে আছেন দলের নবগঠিত ‘কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স’ বিভাগের মহাসচিব, ‘চাঁদা’ শব্দের যমদূত ও সুকুমার ডোনেশন তত্ত্বের প্রধান প্রশিক্ষক, জনাব নাহিদ ইসলাম। সম্প্রতি এই একাডেমির একটি ক্লাস চলাকালীন তোলা ছবিতে দেখা যায় তিনি এক নবীন কর্মীকে অত্যন্ত স্নেহের সাথে শব্দের মারপ্যাঁচ বোঝাচ্ছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশিক্ষণার্থী জানান, ছবিটি ক্লাসের শেষ মুহূর্তের। সারাদিন ধরে নতুন কর্মীদের ‘ডোনেশন’ সংগ্রহের বিভিন্ন কলাকৌশল, যেমন ‘হুমকি ছাড়া অনুরোধ’, ‘হাসিমুখে দাবি উপস্থাপন’ এবং ‘ডোনারের মনস্তাত্ত্বিক চাপ সৃষ্টির উপায়’ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে মাঠ পর্যায়ে অনুশীলনের জন্য গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় পাঠানো হয় দলের শাউয়া কাঁপানো ৩ সমন্বয়ক এএইচএম নোমান রেজা, তানজিল হোসেন ও ফারিয়া আক্তার তমাকে

ঘণ্টাখানেক পর নোমান রেজা ১০ লাখ টাকা নিয়ে একাডেমিতে ফিরে আসেন। মহাপরিচালক নাহিদ ইসলামের বিলাসবহুল কক্ষে প্রবেশ করে তিনি হাঁপাতে হাঁপাতে বলেন, “স্যার, জান বাইর হইয়া গেছে! উত্তরার  দেলোয়ার হোসেন সাহেব কিছুতেই আজকের চাঁদাটা দিতে চাইতেছিল না। বহুত কষ্টে আদায় করছি।”

‘চাঁদা’ শব্দটি শোনার সাথে সাথেই মহাপরিচালক নাহিদ ইসলামের হাসিখুশি মুখ থমথমে হয়ে যায়। তিনি তার ইতালিয়ান লেদারের আরামদায়ক চেয়ারে নড়েচড়ে বসেন। তারপর তর্জনী উঁচিয়ে, শান্ত কিন্তু হিমশীতল কণ্ঠে নোমান রেজাকে ডেকে বলেন, “এইখানে আয়।”

ভয়ে নোমান রেজার গলা শুকিয়ে কাঠ। কাঁপা কাঁপা পায়ে এগিয়ে যেতেই নাহিদ ইসলাম তার কান ধরে একটি মোলায়েম মোচড় দিয়ে বলেন, “বেকুব! তোর মাথায় কি গোবর ভরা? এই একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার সময় তোকে ‘নিষিদ্ধ শব্দের তালিকা’ ধরিয়ে দেওয়া হয়নি? কতবার বলেছি এই শব্দটি উচ্চারণ করাও মহাপাপ?”

এরপর তিনি নোমান রেজাকে উদ্দেশ্য করে যে ভাষণ দেন, তা এখন এনসিপির প্রত্যেক কর্মীর জন্য অবশ্যপাঠ্য। তিনি বলেন, “তুই আনবি ডোনেশন, হাদিয়া, এয়ানত। আর কখনো চাঁদা আনতে যাবি না। বুঝেছিস?”

তিনি আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, “শোন, ‘চাঁদা’ একটা সন্ত্রাসী শব্দ। এইটা বিএনপি-জামায়াতের গুন্ডারা ব্যবহার করে। আমরা হলাম পরিবর্তনের অগ্রদূত, আমরা ভদ্রলোকের রাজনীতি করি। যখন কোনো ব্যবসায়ী নিজ ইচ্ছায় দেশের উন্নয়নে শরিক হতে টাকা দেয়, সেটা হলো ‘ডোনেশন’। যখন কোনো বড় শিল্পপতি আমাদের দর্শন পছন্দ করে খুশি হয়ে কিছু দেন, সেটা হলো ‘হাদিয়া’। আর যখন কোনো ব্যবসায়ী ভবিষ্যতে যেন কোনো ‘ভুল বোঝাবুঝি’ না হয়, সেইজন্য আগাম কিছু দিয়ে আমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে, সেটা হলো ‘এয়ানত’। তুই পার্টির পক্ষ থেকে এয়ানত গ্রহণ করতে পারিস, কিন্তু চাঁদা চাইতে পারিস না। মনে থাকবে?”

মহাপরিচালকের এই অমূল্য বাণী শুনে নোমান রেজার জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয়। তিনি সাথে সাথে নিজের ভুল বুঝতে পেরে কান ধরে উঠবস করতে শুরু করেন।

জানা গেছে, এই একাডেমিতে শুধু শব্দের প্রশিক্ষণই নয়, ডোনারের আর্থিক অবস্থা বুঝে ‘ডোনেশন’, ‘হাদিয়া’ ও ‘এয়ানত’-এর মধ্যে কোনটি প্রয়োগ করতে হবে, তার উপর বিশেষ কোর্স করানো হচ্ছে। কোর্স শেষে উত্তীর্ণ কর্মীদের ‘স্নাতক ডোনেশন অফিসার’ হিসেবে সার্টিফিকেটও প্রদান করা হচ্ছে। এরাই নাকি ‘চাঁদা’ শব্দমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়বে।

#, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #, #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *